সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ জুলাই, ২০১৭ ১৯:১৫

উত্তরা গণভবন থেকে সরলো কুখ্যাত মোনায়েমের নামফলক

প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাঞ্চলীয় বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবন থেকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আব্দুল মোনায়েম খানের নামফলক অপসারণ করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর সারাদেশের সব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম অপসারণের আদেশ দেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় উত্তরা গণভবন থেকে মোনায়েম খানের নামফলক অপসারণ করা হল।

শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে এ নামফলক অপসারণের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

এরআগে, উত্তরা গণভবন থেকে কুখ্যাত মোনায়েম খানের নামফলক অপসারণের জন্য গত ২৯ জুন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে এক চিঠি দেয়। ওই চিঠির আলোকেই গত ৪ জুলাই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সুরাইয়া বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠি গত ৫ জুলাই নাটোরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমানের কাছে এসে পৌঁছায়।

চিঠিতে বলা হয়, নাটোর জেলার উত্তরা গণভবন হতে স্বাধীনতাবিরোধী কুখ্যাত রাজাকার মোনায়েম খানের নামফলক নাটোর জেলা প্রশাসনের সহায়তায় অপসারণ করে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেয়া হল।

নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত ৯ জুলাই অপসারণের দিন ধার্য করা হলেও প্রশাসনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি না থাকার কারণে তা অপসারণ করা হয়নি।

জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর দিঘাপতিয়া রাজপরিবারের শেষ রাজা প্রতিভা নাথ রায় দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। ১৯৫০ সালে জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর এই রাজবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা দেখা দেয়। এরপর ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার রাজবাড়িটি অধিগ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালের ২৪ জুলাই পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর মোনায়েম খান রাজবাড়িটিকে গভর্নর হাউস হিসেবে উদ্বোধন করেন। এ কারণে তার নামে এই নামফলকটি প্রধান প্রাসাদে স্থাপন করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই গভর্নর হাউসের নাম পরিবর্তন করে একে উত্তরা গণভবন হিসেবে নাম দেন। তখন থেকেই প্রধান প্রাসাদে শেখ মুজিবুর রহমান ও মোনায়েম খানের নামের নামফলক পাশাপাশি স্থাপিত ছিল।

নামফলক অপসারণের সময়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. আজাদুর রহমান, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান, পৌর মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড জেলা শাখার আহবায়ক উমা চৌধুরী জলি প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত