সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ জুলাই, ২০১৭ ২১:০১

সোর্সদের টাকা না দিয়ে নাকি ইয়াবা দেওয়া হচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী

সোর্সদের টাকা না দিয়ে নাকি ইয়াবা দেওয়া হচ্ছে এমন এক অভিযোগ করে বিষয়টি যাচাই করার আহবান জানিয়েছে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনি বলেন, ইয়াবা ধরা হচ্ছে। সেজন্য সোর্সদের টাকা না দিয়ে নাকি ইয়াবা দেওয়া হচ্ছে। এটা তো মারাত্মক ব্যাপার।

শনিবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রামে র‍্যাবের উদ্ধার করা মাদক ধ্বংস কার্যক্রম অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

পতেঙ্গায় র‍্যাব-৭-এর সদর দপ্তরে মাদকদ্রব্য ধ্বংস কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুপুরে ৩৫ লাখ ৭০ হাজার ইয়বা, ৭ হাজার ১৮১ বোতল ফেনসিডিল, ২০০ বোতল বিদেশি মদ ও ২০০ কেজি গাঁজা ধ্বংস করা হয়। সাম্প্রতিক বিভিন্ন অভিযানে র‍্যাব-৭ এসব মাদকদ্রব্য জব্দ করে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘(সোর্সকে) টাকা না দিয়ে আপনি ইয়াবা দিবেন এটা তো হতে পারে না। আমাদের সরকার তো ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে একটি কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আমি বক্তব্যের শুরুতেই বলেছি, এটার সত্যতা আমার কাছে নেই কিন্তু। আমি বলছি, যেহেতু আমার কানে এসেছে। কিন্তু এটার সত্যতা যাচাই করা অবশ্যই আমি মনে করি প্রশাসন বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন তা যাচাই করবেন।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, এ ইয়াবা নিয়ে আনোয়ারা উপজেলায় ঘরে ঘরে সমস্যা হচ্ছে। উপকূলসহ সড়কপথে ইয়াবা এ এলাকায় বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি। তিনি দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে যে কোনো কিছুর বিনিময়ে ইয়াবা নির্মূল করার দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বড়ির চালান ঠেকাতে টেকনাফ ও মিয়ানমারের মাঝখানে নাফ নদীতে মাছ ধরা সাময়িক বন্ধের কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইয়াবা পাচার বন্ধের জন্য আমরা নাফ নদীতে একটি প্রোগ্রাম (কর্মসূচি) নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রোগ্রাম সম্পর্কে পরে ঘোষণা দেব। আমরা জেলেদের শুধু অনুরোধ করব তাঁরা যেন নাফ নদীতে মাছ ধরতে না যান। ওই সময় বিজিবি এবং কোস্টগার্ডের নজরদারিতে এসে যাবে—কারা সীমান্ত পাড়ি দেয়, কারা নদী অতিক্রম করে এবং বাংলাদেশে ইয়াবা নিয়ে আসে। তাহলে ইয়াবা নিয়ে আরও সুন্দরভাবে কাজ করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ভারত থেকে আগে ফেনসিডিল আসত। এ বিষয়ে বন্ধু রাষ্ট্র ভারত সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি। ভারত বিভিন্ন সীমান্তে ফেনসিডিল উৎপাদন বন্ধ করেছে। ফলে সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল আসা আমাদের দেশে অনেক কমে গেছে। আসলে আমাদের দেশে মাদক কখনো তৈরি হয় না। তারপরও আমরা এর শিকার হচ্ছি। কখনো হেরোইন, কখনো ফেনসিডিল—এখন ইয়াবা মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা মিয়ানমারকে জানিয়েছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু সুফল পাচ্ছি না।

র‍্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ মিয়ানমারের সীমান্তে নাফ নদীর এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জেলেমুক্ত অঞ্চল করার প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরার কথা বলে ইয়াবা আনা হচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশের মাছ ধরার ট্রলারগুলোয় বিশেষ রং দেওয়া এবং জেলেদের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করা উচিত। এ প্রস্তাব ছয় মাসের জন্য কার্যকর করা যেতে পারে।

মাদক ধ্বংস অনুষ্ঠানে সাংসদ এমএ লতিফ, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, নগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ধর্মীয় প্রতিনিধি ও মাদকসেবীও বক্তৃতা করেন।

ভিডিও : আরটিভির সৌজন্যে

আপনার মন্তব্য

আলোচিত