সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০২:০০

রংপুরে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

আজ রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) নির্বাচন। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনি সামগ্রী। বর্তমান কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে ‘মডেল’ হিসেবে দেখতে চায় কমিশন।

এদিকে রংপুর সিটি নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারে ইসির সব প্রস্তুতি থাকলেও শেষ সময়ে এসে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বুধবার বিকালে আগারগাঁওস্থ কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে কমিশন।

এসময় সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা বলেন, ভোটের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের যে অবজারভেশন- পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনুকূলে রয়েছে। সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট হবে।

এ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাত করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এমন কথাও তুলে ধরেন সিইসি।

এ সময় নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমান কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও আরও  ৪জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিএনপির কাওছার জামান বাবলা, সিপিবি ও বাসদের আব্দুল কুদ্দুস, ইসলামী আন্দোলনের এবিএম গোলাম মোস্তফা, এনপিপির শাহিন রহমান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের আপন ভাতিজা আসিফ মকবুল শাহরিয়ার।

রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ২১১ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৬৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রংপুর সিটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৪ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৫৬, মহিলা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৯৩। ভোটকক্ষ ১১৭৮টি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ৩ হাজার ৫৫৯ জন।

ইভিএম নিয়ে এখন সংশয়
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মাত্র একটি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হওয়ার কথা বললেও শেষ মুহুর্তে সংশয় দেখা দিয়েছে। খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই সংশয়ের কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রংপুরে গোটা তিনেক কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। একটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের কথা ছিল। সম্পূর্ণভাবে সিকিউরড হলে তখনই এটা ব্যবহার করা হবে।

১৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৪১ নম্বর কেন্দ্রে নিজেদের তৈরি ইভিএম ব্যবহারে ইতোমধ্যে সব ধরনের মহড়া ও প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছিল ইসি। এতে ১০-১৫ লাখ টাকাও ব্যয় হয়েছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নতুন ইভিএমটি ইসির অনেক কর্মকর্তাই এখনও দেখেননি। কিন্তু হুট করে কোনও ধরনের কথাবার্তা ছাড়াই মাঠ পর্যায়ের ভোটে এটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারের বিরোধিতা করে আসছেন ইসি কর্মকর্তারাও। ইসির একটি অংশ ও এনআইডি উইং অতি উৎসাহী হয়েই পুরনো সচল ইভিএম বাদ দিয়ে নতুন ইভিএম নিয়ে রংপুরে গেছে।

কোনও ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে নতুন ইভিএম নিয়ে মক ভোটিং ও প্রশিক্ষণে একদল কর্মকর্তা রংপুরে ভ্রমণও করেন। শেষ মুহূর্তে এসে সংশয়ের কথা জানান সিইসি।

এক প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, এটা টেকনিক্যাল বিষয়; কারিগরি টিম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। এখনও কনফার্ম করতে পারছি না ইভিএম ব্যবহার হবে কিনা। শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে তো ব্যবহারে যেতে পারি না। নতুন ইভিএম তো, কাল সকালেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিরাপত্তায় সাড়ে পাঁচ হাজার সদস্য: রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ হাজার ৫০০ সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিজিবি ২১ প্লাটুন (৬৩০ জন), র‌্যাবের ৩৩ টিম (৪০০ জন), পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকবে ৪ হাজার ৪৭০ জন।

এছাড়া একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৩৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, একজন করে বিচারিক হাকিমের নেতৃত্বে ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। এর বাইরে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তার সময়ে একটি পর্যবেক্ষক টিম নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা ও রংপুর থেকে দুটি পৃথক মনিটরিং টিম এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত