সিলেটটুডে ডেস্ক

৩১ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৯:৪০

গণতন্ত্রের বৈশ্বিক সূচকে ৮ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ

গত এক বছরে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবস্থার অবনতি হয়েছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ ধাপ পিছিয়ে তালিকায় ৯২তম স্থানে রয়েছে।

বুধবার ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) বৈশ্বিক গণতন্ত্রের সূচক-২০১৭ প্রকাশ করেছে। লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ গ্রুপের গবেষণা ও বিশ্লেষণ বিভাগ হচ্ছে ইআইইউ।

সূচকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ২০১৬ সালের তুলনায় বাংলাদেশের স্কোরও কমেছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম এবং স্কোর ছিল দশের মধ্যে ৫.৭৩। আর ২০১৭ সালে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়ায় ৯২তম এবং স্কোর ১০-এর মধ্যে ৫.৪৩।

পাঁচটি মানদণ্ডে ২০১৭ সালের পরিস্থিতি বিচার করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বুধবার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনমন ঘটেছে আগের বছরের চেয়ে আট ধাপ।

৫.৪৩ স্কোর নিয়ে এই সূচকে বাংলাদেশ এবার রয়েছে ১৬৫টি দেশ ও দুটি অঞ্চলের মধ্যে ৯২তম অবস্থানে। গতবছর স্কোর ছিল ৫.৭৩; অবস্থান ছিল ৮৪তম।

২০০৬ সালে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এই সূচক প্রকাশ শুরুর পর কোনোবারই বাংলাদেশের স্কোর এত কম ছিল না।

প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৬.৪৮ স্কোর নিয়ে এবারের সূচকে ৬২তম এবং ভারত ৭.২৩ স্কোর নিয়ে ৪২তম অবস্থানে রয়েছে।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, গতবছর পুরো বিশ্বেই বহুদলীয় গণতন্ত্র ও নাগরিক স্বাধীনতার জায়গা সঙ্কুচিত হয়েছে। বৈশ্বিক স্কোর আগের বছরের ৫.৫২ থেকে নেমে এসেছে ৫.৪৮-এ।

এবারের সূচকে যেখানে ৮৯টি দেশের অবস্থানের অবনতি ঘটেছে, সেখানে মাত্র ২৭টি দেশ নিজেদের রাজনৈতিক পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে পেরেছে।

নির্বাচনী ব্যবস্থা, বহুদলীয় অবস্থান, নাগরিক অধিকার, সরকারে সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি- এই পাঁচ মানদণ্ডে একটি দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১০ ভিত্তিক এই সূচক তৈরি করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।

সব সূচক মিলিয়ে কোনো দেশের গড় স্কোর ৮ এর বেশি হলে সেই দেশে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

স্কোর ৬ থেকে ৮ এর মধ্যে হলে সেখানে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’, ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে হলে ‘মিশ্র শাসন’ এবং ৪ এর নিচে হলে সে দেশে ‘স্বৈরশাসন’ চলছে বলে ধরতে হবে।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এবারের প্রতিবেদনে পূর্ণ গণতন্ত্রের দেশ আছে মাত্র ১৯টি, যেখানে বিশ্বের মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ মানুষের বসবাস।

সাতটি মহাদেশের মধ্যে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এবার এশিয়ার স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫.৬৩।

৯.৮৭ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। শীর্ষ দশে আরও আছে আইসল্যান্ড, সুইডেন, নিউ জিল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড।

যুক্তরাজ্য ও জার্মানি পূর্ণ গণতন্ত্রের দেশের তালিকায় থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের স্থান হয়েছে গতবারের মতই ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের’ দেশের তালিকায়।

বাংলাদেশকে এই প্রতিবেদনে রাখা হয়েছে মিশ্র শাসনের দেশের তালিকায়, যেখানে নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইরাকসহ ৩৯টি দেশ রয়েছে। এসব দেশে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৬.৭ শতাশের বসবাস।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বিবেচনায় বিশ্বের ৩৪ শতাংশ মানুষ এখন স্বৈরশাসনে জীবন কাটাচ্ছে।

তালিকার তলানিতে আছে উত্তর কোরিয়া; মিয়ানমার, সৌদি আরব, ইরান, চীন ও রশিয়াকেও একই কাতারে রাখা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত