সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:৩৮

খালেদার শারীরিক অবস্থা গুরুতর নয়: চিকিৎসক

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের দণ্ডে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর কিছু নয় বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।

খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠন করা মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগের প্রধান মো. শামসুজ্জামান জানান, "এক কথায় বলবো যে উনি অসুস্থ কিন্তু খুব মারাত্মক কিছু নয়।"

তিনি বলেন, "অসুস্থতা উনার আগেও ছিল, এখন সেগুলো বেড়েছে। তবে গুরুতর কিছু নয়, শঙ্কারও কিছু নেই। অসুস্থতা আগে যা ছিল তার থেকে মাত্রা একুট বেড়েছে-আমরা তাই পেয়েছি।"

এদিকে বিএনপির নেতারা গত কয়েকদিন ধরেই অভিযোগ করছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তারা স্পষ্ট কোনও ধারণা পাচ্ছেন না। দলীয় নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তারা তার মুক্তির দাবি করেছেন।

এরই প্রেক্ষিতে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করা হয় একটি মেডিকেল বোর্ড।

হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে হাসপাতালের উপ-পরিচালক চিকিৎসক শাহ আলম তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চারজন চিকিৎসককে নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের প্রধান করা হয় অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামানকে।

তিনি জানান, তার (মো. শামসুজ্জামান) নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড রোববার দুপুরে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

বোর্ডের অন্য চিকিৎসকরা হলেন- মেডিসিন বিভাগের ডা. টিটু মিয়া, নিউরোলজি বিভাগের ডা. মনসুর হাবীব ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের ডা. সোহেলী রহমান।

তারা খালেদা জিয়াকে দেখে আসার পর কোনো প্রতিবেদন হাসপাতালে জমা দেননি জানিয়ে উপ পরিচালক বলেন, প্রতিবেদন পাওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

খালেদার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামানের কাছে। তিনি বলেন, কারাগারে আসার আগেই খালেদা জিয়ার শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। সেটা এখন একটু বেড়েছে। তবে গুরুতর নয়।

তিনি বলেন, এ ধরনের সমস্যা বয়সের কারণেও হয়ে থাকে। তবে নিয়মিত চিকিৎসা চললে ঠিক হয়ে যাবে।

এখনই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে এমনটিও নয়। তিনি আগে থেকেই যেসব ওষুধ সেবন করছেন, তার সঙ্গে ২-৩টা ওষুধ যোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রক্ত পরীক্ষা ও করতে বলা হয়েছে। এই পরীক্ষা কারাকর্তৃপক্ষ করাবে।

গত শুক্রবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চেয়ারপারসনকে জামিনে মুক্তি দিয়ে অবিলম্বে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নিজস্ব চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সুচিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে।

মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন দুপুরে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতার জন্য প্রয়োজন হলে সরকার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সেদিন থেকেই তিনি কারাবন্দী রয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত