সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ এপ্রিল, ২০১৮ ১১:৫০

জুলহাজ-তনয় হত্যার ২ বছরেও খুনিরা অধরা

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের কর্মকর্তা ও সমকামীদের অধিকার বিষয়ক ম্যাগাজিন 'রূপবান' এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয় হত্যার আজ দুই বছর। এই দুই বছরেও ধরা পড়েনি মূল খুনিরা, তদন্তে হয়নি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

পুলিশের দাবি, তারা এরই মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছেন, যাদের মধ্যে তিনজন হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন পর্যায়ে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আরও অন্তত তিন থেকে চারজনের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত ও ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে দু'টি। মামলা দুটি প্রথমে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করলেও সম্প্রতি এটি পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) তদন্ত করছে।

সিটিটিসির উপ-কমিশনার (ডিসি) মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ডে আমরা এরই মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যারা হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন পর্যায়ে অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে তিনজন দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। আরও তিন-চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও আনসার আল ইসলামের সদস্যরা জড়িত। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারাও জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি জানিয়েছে।’

জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে শরীফুল ইসলাম ওরফে কেরামত ওরফে শিহাব নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে সে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল বলে পুলিশের দাবি। এছাড়া ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর সায়েদাবাদ থেকে ব্লগার নাজিম উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় রশিদুন্নবী ভূঁইয়া ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান নামে এক যুবককে। পরে তাকে জুলহাজ-তনয় হত্যা মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত বছরের ১৮ নভেম্বর তুরাগের বাউনিয়া বাঁধ এলাকা থেকে মোজাম্মেল হোসেন সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও ২৫ নভেম্বর সাভারের আমিনবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরাফাত রহমান নামে দুই যুবককে। এ দুইজন জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ড ছাড়াও ব্লগার অভিজিৎ রায় ও নিলয় এবং প্রকাশক দীপন হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে জানায় পুলিশ।

সায়মন ও আরাফাতকে প্রথমে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাদের দুজনকেই জুলহাজ-তনয় হত্যায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আর সবশেষ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা ইয়ামিন মিয়া ওরফে জাভেদ নামে আনসার আল ইসলামের এক সদস্যকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে ওই ঘটনায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন। আর কলাবাগান থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত