জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তির সুপারিশ করেছে তাঁর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড।

রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিএসএমএমইউর পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল হারুন।

তিনি বলেন, কয়েকটি সুপারিশসহ মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতিবেদন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ হলো বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে এই অসুস্থতা কারাগারে থাকার কারণে নয়। কারাবন্দী হওয়ার আগে থেকে খালেদা জিয়ার বেশ কিছু সমস্যা ছিল।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা গুরুতর নয়। বোর্ড সুপারিশ করেছে যে হাসপাতালে সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, সেখানে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করাতে। তারা বিএসএমএমইউর নামও সুপারিশ করেছে। খালেদা জিয়ার কিছু স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতেও সুপারিশ করা হয়েছে।

এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী রাজধানীর কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানায়।

এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের সদস্যরা শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী (ইন্টারনাল মেডিসিন), অধ্যাপক হারিসুল হক (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী (অর্থোপেডিক সার্জারি), সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলী (চক্ষু) ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।

এদিকে এই মেডিকেল বোর্ডে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কোনো চিকিৎসক না রাখায় এর সমালোচনা করেছে বিএনপি।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই মেডিকেল বোর্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নই আমরা। সরকারের গঠিত মেডিকেল বোর্ডে উপযুক্ত ও সঠিক চিকিৎসা হবে না। আগে যাঁরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করতেন, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুনভাবে মেডিকেল বোর্ড করার দাবিও জানান তিনি।

খন্দকার মোশাররফ অভিযোগ করে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের কথা দিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কিছুসংখ্যক চিকিৎসক এবং সরকারের কিছু চিকিৎসক দিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড করবেন। কিন্তু হয়নি। এতে তাঁরা হতাশ হয়েছেন।