নিউজ ডেস্ক

২২ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:৪৮

বিদেশীদের দিকে তাকিয়ে আছে ২০ দলীয় জোট

আন্দোলন দমনে সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে অভিযোগ করে সেদিকে বিদেশিদের নজর চেয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল

মাঠের আন্দোলনে কার্যত ব্যর্থ হয়ে নাশকতার মাধ্যমে আন্দোলনের সুফল না পাওয়ায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোট এখন তাকিয়ে আছে বিদেশিদের দিকে। এই মুহুর্তে একমাত্র আন্তর্জাতিক চাপ ছাড়া হাসিনা সরকারের পতন সম্ভব না বলে মনে করছে তাদের নেতৃত্ব। 

আন্দোলন দমনে সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে অভিযোগ করে সেদিকে বিদেশিদের নজর চেয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল। নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন নেতা-কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার (২১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এই প্রত্যাশা জানানো হয়।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়- জনগণের আন্দোলনে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ভীত হয়ে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠি রক্তের নেশায় উন্মাদ হয়ে পড়েছে।প্রতিদিন কুৎসিত হুমকি, জুলুম-নির্যাতন, অধিকার হরণ, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার, অপহরণ-গুম-খুন, নাশকতা-অন্তর্ঘাত চালিয়ে শেষ রক্ষা হচ্ছে না দেখে তারা এখন তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নির্মম নিষ্ঠুর নাটক সাজিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে হত্যার তাণ্ডবে মেতে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন- আটকাবস্থায় এহেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতি আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

গত এক সপ্তাহে ঢাকায় ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনি, নড়াইলের জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইমরুল কায়েস এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছাত্রদল নেতা কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এই তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে ২০ দল দাবি করলেও পুলিশের কাজে সমর্থন জানিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নিহতরা ছিল ভয়ানক সন্ত্রাসী।

অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নাটোরে ছাত্রদল নেতা রাকিব হোসেন ও রায়হান আলী, রাজশাহীতে বিএনপিকর্মী মজিরউদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে মন্তাজ আলী, নোয়াখালীর সেনবাগে যুবদলের মিজানুর রহমান, বেগমগঞ্জে ছাত্রদলের মহসিন উদ্দীন, সোনাইমুড়িতে মোরশেদ আলম পারভেজ, চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির সিরাজুল ইসলাম নিহতের ঘটনাগুলোও তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে।

বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে ২০ দল বলেছে- নিরাপরাধ মানুষের ওপর হামলার প্রতিকার ও বিচার অবশ্যই হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সন্ত্রাসীদের খুনের ছাড়পত্র দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা আবার কঠোর হুঁশিয়ারি জানাচ্ছি। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমতাসীনদের অবশ্যই দায়ী থাকতে হবে এবং জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আগামীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের জন্য সরকারের রাজনৈতিক পদক্ষেপ চেয়ে বিবৃতিতে বলা হয়- দেশি-বিদেশি আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার দমননীতি অনুসরণ করেছে। সকলকে সংযত ও পরিণামদর্শী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। হানাহানি ও দমন-পীড়নের পথ ছেড়ে নিয়ে সমঝোতার লক্ষ্যে পরিস্থিতিকে দ্রুত স্বাভাবিক করার আহ্বান জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, আন্দোলনরত বিশ দলীয় জোট যখন বিবৃতি দিলো তার একদিন আগে বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি কূটনীতিকদের একটি প্রভাবশালি গ্রুপ নাশকতাকারী সন্ত্রাসীদলগুলো নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছে সরকারের কাছে।




আপনার মন্তব্য

আলোচিত