ইউএনবি, ঢাকা

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৮:২০

‘নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে’

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার অভিপ্রায়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও নিরাপত্তার জন্য কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। এখানে জেলখানার মতো হবে তা ভাবার কোনো কারণ নেই।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশ সরকার কেন কাঁটাতারের বেড়া দিতে চায়, তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার রাষ্ট্রদূত। তাদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেছেন।

তুরস্কসহ পৃথিবীর অনেক দেশ শরণার্থীদের নির্দিষ্ট প্রাচীরেই রাখে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তেমনি আমরা কাঁটাতার দিয়ে প্রাচীর করে দেব, যাতে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে না যায়। এতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা) আশ্বস্ত হয়েছেন।”

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্থার আর্ল মিলার বৈঠক করেন। এর আগে কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রভোটেইনের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর সাথে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফ করেন মন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুব শিগগির কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে।

বেড়ার প্রাসঙ্গিকতা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কাঁটাতার দিলে তারা (রোহিঙ্গারা) একটি জায়গায় থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় থাকবে। রোহিঙ্গারা নিজেরা মারামারি করে, সম্প্রতি তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে, অনেকে ইয়াবাসহ মাদকের বাহক হিসেবে কাজ করছে। এসব বন্ধে কাঁটাতার দিয়ে প্রাচীর করা হবে।

কবে নাগাদ বেড়া হতে পারে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “খুব শিগগিরই হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে জানা যাবে। প্রথমে বড় ৩/৪ টি ক্যাম্পে বেড়া দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে পুরো ক্যাম্পে বেড়া দেওয়া হবে।”

এছাড়া রোহিঙ্গাদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য ক্যাম্পে ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূতরা ক্যাম্পে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের নিজ দেশের ভাষা শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন। আমরাও বলেছি তাদের বাচ্চাদের যাতে তাদের দেশের ভাষা ও কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা দেওয়া হয়। সেটি এনজিওদেরও বলেছি।”

মন্ত্রী আরও বলেন, “রাষ্ট্রদূতেরা বলেছেন রোহিঙ্গারা ফোনে কথা বলতে পারছে না, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছে না। আমি তাদের বলেছি, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। কারণ রোহিঙ্গারা যাতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পারে।”

“তাছাড়া মিয়ানমারও বলেছে সন্ত্রাসীরা সীমান্ত দিয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। আমরা এসব কারণে ফোন ও নেট বন্ধ করেছি যাতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না করতে পারে,” যোগ করেন তিনি।

সম্প্রতি রোহিঙ্গারা যে সমাবেশ করেছে তাতে বাংলাদেশ সরকার কিছু মনে করছে কি না? রাষ্ট্রদূতরা সেটাও জানতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে তিনি তাদের বলেছেন, “তারা তাদের আকুতি জানাতে সমাবেশ করতেই পারে। তাতে আমরা কিছু মনে করিনি।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত