সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৪:৫৬

ভ্যাট প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত স্ব স্ব ক্যাম্পাসে ধর্মঘট ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার সকালে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে আরেক সংবাদ সম্মেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ এর সমন্বয়ক জ্যোর্তিময় চক্রবর্তী ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্র ধর্মঘটের এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “অবিলম্বে টিউশন ফির ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার ও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য টিউশন ফি নির্ধারণের নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে আমরা ধর্মঘট পালন করব।”

সরকারের আশ্বাসকে ‘অতি চতুরতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

এদিকে, উচ্চ শিক্ষায় ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী রোববার সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করে সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ৪ জুলাই এ বিষয়ে আদেশ জারি করে।

এরপর থেকেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার বামপুরা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।


বুধবার রাতে ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোঘণা দেয় ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সংগঠন। বৃহস্পতিবার অন্তত ৭টি পয়েন্টে অন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে বলে সংগঠন মুখপাত্র ফারুক আহমাদ আরিফ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ভ্যাট প্রতাহারের দাবিতে পরদিন আবারো রাজধানীর বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ দিন কার্যত গোটা রাজধানীতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে ভয়াবহ এক দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা।

এর পরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, “শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করার জন্য নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হয়নি। বিদ্যমান টিউশন ফি’র মধ্যে ভ্যাট অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ভ্যাট বাবদ অর্থ পরিশোধ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, কোনক্রমেই শিক্ষার্থীদের নয়।”

‘বিদ্যমান টিউশন ফি’র মধ্যে ভ্যাট ‘অন্তর্ভুক্ত থাকায়’ টিউশন ফি বাড়ার কোনো ‘সুযোগ নেই’ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে এনবিআরের ব্যাখ্যার পরপর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জানায়, তারাই ভ্যাট পরিশোধ করবে। যে সব শিক্ষার্থীরা ভ্যাট বাবদ অর্থ পরিশোধ করেছে, তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

এরপর গুলশান-মহাখালী সড়কে বিশ্ববিদ্যালয়টির সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। রামপুরায় ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সন্ধ্যার পর সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত