সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ অক্টোবর, ২০১৫ ২০:৩৯

কৃষিপ্রেমে বাংলাদেশে এসে লাশ হলেন কুনিও

মাল্টিপল ভিসা নিয়ে গত বছরের ৮ আগষ্ট প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসেন জাপানি নাগরিক হোসে কোনিও। উদ্দেশ্য ছিলো উন্নত মানের আলুর বীজ চাষ এবং ‘কোয়েল’ নামের একধরণের উন্নতমানের ঘাষ চাষ করবেন। সে লক্ষ্যেই তিনি আলুটারি গ্রামে দুই একর জমি ইজারা নিয়ে ঘাসের আবাদ শুরু করেন।

স্থানীয়রা জানান জমির মালিকের কাছ থেকে ১লক্ষ ১০ হাজার টাকায় ২ একর জমি লীজ নিয়েছিলেন কোনিও। ফার্মের ব্যবসায়িক পার্টনার হাবিবুর রহমানকে নিয়ে কাজ শুরু করেন কোনিও। তার লক্ষ্য ছিলো নতুন আলুর বীজ চাষ সফল হলে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে এই পণ্য নিয়ে কাজ করবেন।

বসবাসের জন্য রংপুরের জাকারিয়া বালার বাড়ি ভাড়া করে একাই বসবাস করতে থাকেন কৃষিপ্রেমি এই মানুষ। তবে তিনি জাপানে যাওয়া আসার মধ্যে থাকতেন। বাড়িওয়ালা জাকারিয়ার শ্যালক হীরার মাছের খামার ছিল কুনিওর ঘাস ও আলুর পরীক্ষামূলক খামারের পাশেই। খামারে যাওয়ার সময় প্রতিদিন হীরাও তার সঙ্গে থাকতেন। কিন্তু শনিবার কুনিও একাই খামারের দিকে রওনা হন।

তার মৃত্যুকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে আটক হবার আগে হীরা সাংবাদিকদের বলেন, “প্রতিদিন তার সঙ্গে আমিও একই রিকশায় খামারে যেতাম। শনিবার জরুরি কাজ থাকায় হোশি একাই খামারে যান।”

শনিবার সকালে রিকশায় করে খামারে যাবার পথে মুখোশধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন হোসে কুনিও। এই ঘটনায়  কুনিওর বাড়িওয়ালা মুন্সীপাড়ার জাকারিয়া বালা (৫৮) ও তার শ্যালক হীরা (৪৮), রিকশাচালক মোন্নাফ আলী ও আলুটারি গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে মুরাদ হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য  আটক করেছে পুলিশ।

কৃষিপ্রেমে বাংলাদেশে এসে লাশ হবার পর ওই এলাকার মানুষ হতবাক। কুনিও অত্যন্ত বিনয়ী  এবং প্রকৃতিপ্রেমী বলে উল্লেখ্য করেছেন স্থানীয়রা।

১৯৪৯ সালের ৩১ মে জাপানে জন্মগ্রহণ করেন হোসি কোনিও'র পাসপোর্টটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার বয়স ৬৬ বছর। তার ভিসার মেয়াদ রয়েছে ২০১৬ সালের ৩১ মে পর্যন্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৮ অগাস্ট সর্বশেষ বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নাগরিক। তবে তার অবস্থানের ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে কিছু জানানো হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত