সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০২:১৩

নারীদের জন্যে চুড়ি, পুতুল, ফ্রক, ভ্যানিটি ব্যাগ, গ্যাসের চুলা সহ ১০ প্রতীক

ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের মত পৌর নির্বাচনেও নারীদের জন্যে রয়েছে চুড়ি, পুতুল, ফ্রক, ভ্যানিটি ব্যাগ,গ্যাসের চুলা সহ ১০ প্রতীক।

এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে একে নারীদের জন্যে অপমানের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ নিয়ে কোন উদ্যোগ নেয় নি। ফলে পূর্বনির্ধারিত প্রতীকেই সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের লড়তে হবে।

পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য আঙুর, কাঁচি, গ্যাসের চুলা, চকলেট, চুড়ি, পুতুল, ফ্রক, ভ্যানিটি ব্যাগ, মৌমাছি ও হারমোনিয়ামসহ ১০টি প্রতীক নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতীকগুলো বেশির ভাগই নারীদের গৃহস্থালী সামগ্রী। যা ভোটারদের কাছে হাস্যকর তো বটে সেই সঙ্গে বিভ্রান্তিকর বলে মনে করা হচ্ছে।

এবারও এ ধরনের প্রতীক বহাল রাখার কারণে নারীদের আলাদা করে দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সম্ভব্য প্রার্থীরা। এসব প্রতীকের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, নারীদের গণ্ডি ঘরের কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাদের দাবি প্রতীকের বিষয়ে ইসি কোনো ধরনের চিন্তা না করে যা খুশি তাই প্রতীক হিসেবে নির্ধারণ করেছে।

মঙ্গলবার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবারও বিতর্কিত প্রতীক রাখার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘আমি বুঝি না, প্রতীক নিয়ে এত কথা কেন? নারীরা কি প্রতীকের ওপর নির্ভরশীল? আমার মনে হয় তারা তাদের কাজে নির্ভরশীল। তাহলে কেন প্রতীক নিয়ে এত কথা? তারা যে কাজটা করে, সেসব যদি আমরা প্রতীক হিসেবে নির্ধারণ করি এতে সমস্যা হওয়ার কথা না।’

এদিকে, বুধবার পৌরসভা নির্বাচনের জন্য প্রতীক চূড়ান্ত করে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সচিব রাজিব আহসান স্বাক্ষরিত একটি বিশেষ পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পরিপত্রটি সংশ্লিষ্ট পৌরসভাগুলোর জেলা নির্বাচন অফিস ও রিটার্নিং অফিস কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ইসির নিবন্ধনে থাকা ৪০টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীর জন্য নিজ নিজ দলের প্রতীক, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের জন্য ১২টি, সাধারণ কাউন্সিলরদের জন্য ১২টি ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলদের জন্য ১০টি নির্ধারিত প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে।

এতে নির্ধারিত প্রতীকের বাইরে অতিরিক্ত প্রতীকের প্রয়োজন হলে ইসিকে জানাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপরে কমিশন ১৯ বিধির (৩) উপ-বিধি অনুসারে অতিরিক্ত প্রতীক নির্ধারণ করেছে। যা পরবর্তী পরিপত্র জারি করে প্রার্থীদের জানানো হবে।

পৌরসভা নির্বাচনের বরাদ্দকৃত ৩৪টি প্রতীক হলো :
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের জন্য ১২টি প্রতীক হলো- ইস্ত্রি, কম্পিউটার, ক্যারাম বোর্ড, চামচ, জগ, টাই, নারিকেল গাছ, বড়শি, মোবাইল ফোন, রেল ইঞ্জিন, হ্যাঙ্গার ও হেলমেট।

স্বতন্ত্র সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য জন্য ১২টি প্রতীক হলো- উটপাখি, গাজর, টিউব লাইট, টেবিল ল্যাম্প, ডালিম, ঢেঁড়শ, পাঞ্জাবি, পানির বোতল, ফাইল কেবিনেট, ব্রিজ, ব্ল্যাক বোর্ড ও স্ক্রু ড্রাইভার।

প্রসঙ্গত, বিধিমালা সংশোধনের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৬৫টি, উপজেলা পরিষদে ৪৬টি, সিটি করপোরেশনে ৩৪টি, পৌরসভায় ৩৪টি ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য ৩৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করে ইসি। যেগুলো অন্য নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে না।

ঘোষিত তফসিল অনুসারে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ। মনোনয়পত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ৩ ডিসেম্বর।

যাছাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৩ ডিসেম্বর। এরপরই চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে লটারি করে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত