সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৯

পুঁজিবাদী উন্নয়ন ও বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, এখন যে উন্নয়ন চলছে, তার লক্ষ্য পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মুনাফা অর্জন করা। এতে ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী উন্নয়ন দেশে দেশে গণহত্যা চালাচ্ছে। তাই পুঁজিবাদী উন্নয়ন ও বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এ লড়াই একা করা যাবে না। এ লড়াইয়ে ঐক্য দরকার। সামাজিক বিপ্লব ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবির জাতীয় সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। তবে তারা দুই ধারার রাজনীতি করে। একটি হলো বুর্জোয়া ধারা, অন্যটি সমাজ বিপ্লবীদের ধারা। এর বাইরে আছে, ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীলদের রাজনীতি। এরাও বুর্জোয়া রাজনীতির অংশ। তারা ব্যক্তিগত মালিকানায় বিশ্বাস করে। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশে বিপ্লবী ও সামাজিক মালিকানার ধারায় বিশ্বাসী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। তাকে প্রধান করে তুলতে পারিনি।

কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি, উগ্র সাম্প্রদায়িক ডানপন্থি গোষ্ঠীর আস্ফালন রুখে গণমানুষের ঐক্য-সংগ্রামকে অগ্রসর করা এবং বামপন্থি ও গণতান্ত্রিক শক্তির সরকার গঠনের আহ্বানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।

এর আগে শুক্রবার দুপুর থেকে দলের নেতাকর্মীরা মিছিল ও ব্যানার নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন।

সিপিবির সাবেক সভাপতি ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, অবিলম্বে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বারবার স্বৈরাচারী শাসনের কবলে পড়েছে। দেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে স্বৈরাচারদের উৎখাত করেছে। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী শাসন আমরা দেখতে চাই না। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বারবার নানা আশঙ্কার জন্ম দিচ্ছে। তাই আমার দাবি অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশ এক সর্বগ্রাসী সংকটে ডুবে আছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে পাকিস্তানের জিঞ্জির থেকে মুক্ত করেছি ভারত কিংবা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নতুন শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়ার জন্য নয়। ক্ষমতাসীন ইউনূস সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে মার্কিন ভূরাজনৈতিক স্বার্থের অনুগত করছে। যা দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।

কমরেড সেলিম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিনে ‘গণভোটের’ জন্য ড. ইউনূস যে প্রস্তাবনা হাজির করেছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা ঐকমত্যের কথা বলে একটি ভুয়া দলিল রচনা করেছে। সাংবিধানিক আদেশ বলবৎ করে সরকার যা করতে যাচ্ছে গণভোটের মধ্য দিয়ে তার বৈধতা হবে না। ঐকমত্যের বাইরে কোনো বিষয় চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতাসীন সরকার সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের মধ্য দিয়ে দেশকে দীর্ঘমেয়াদি এক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নতুন মোড়কে পুরাতন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করছে বর্তমান সরকার।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সাবেক সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাগিব আহসান মুন্না, এসএ রশীদ, মো. আমিনুল ফরিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স ও ডা. দিবালোক সিংহ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত