২১ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:৪৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলাদেশি অর্ধশতাধিক সাংবাদিক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সিনিয়র সাংবাদিক জুয়েল রাজ কর্তৃক গণমাধ্যমে প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ, হতাশা ও তীব্র শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বৈধ ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে এই রায় আইনি আনুষ্ঠানিকতার আবরণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার এক বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ নজির স্থাপন করেছে। বিচারকার্য সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক দ্রুততা, স্বচ্ছতার মৌলিক অভাব এবং অভিযুক্তের মৌলিক আইনি অধিকার সম্পূর্ণ অস্বীকার করার কারণে এই রায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছেও গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা লাভে ব্যর্থ হয়ে তীব্র সমালোচিত হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছে: “এই বিচার এবং শাস্তি ন্যায্য বা ন্যায়সঙ্গত নয়। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা প্রয়োজন, তবে মৃত্যুদণ্ড কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘনকেই বাড়িয়ে তোলে। এটি চূড়ান্ত নিষ্ঠুর, অবমাননাকর এবং অমানবিক শাস্তি এবং কোনো বিচার প্রক্রিয়ায় এর স্থান নেই।” মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড সুনির্দিষ্টভাবে জোর দিয়েছিলেন যে আইসিটির স্বাধীনতার অভাব রয়েছে এবং এর রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বিচার প্রক্রিয়ার ইতিহাস রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW) এই উদ্বেগগুলিকে সমর্থন করে বলেছে: “সকল ফৌজদারি কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক ন্যায্য বিচারের মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। এর অনুপস্থিতি এবং অনুপস্থিতিতে বিচার (Trial in absentia) ন্যায্য বিচারের অধিকারকে মৌলিকভাবে ক্ষুণ্ণ করে।” এইচআরডব্লিউ আরও উল্লেখ করেছে যে শেখ হাসিনাকে নিজের পছন্দের আইনজীবী নিয়োগের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য নিযুক্ত আইনজীবীরা কার্যকরভাবে সাক্ষীদের জেরা করতে বা পাল্টা প্রমাণ উপস্থাপন করতে সক্ষম হননি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (OHCHR) মৃত্যুদণ্ড আরোপের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে: “আমরা সব পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করি। এই রায় ভুক্তভোগীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত চিহ্নিত করে, কিন্তু ন্যায়বিচার অবশ্যই ন্যায্য এবং নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।” বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির এই ঐকমত্যপূর্ণ বিবৃতি ন্যায়বিচারের চরম রাজনৈতিকীকরণ এবং বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির গভীর ক্ষয়ের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগকেই শক্তিশালীভাবে সমর্থন করে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন: আবু মুসা হাসান - বীর মুক্তিযোদ্ধা ,সাবেক প্রেস মিনিস্টার যুক্তরাজ্য; শামীম চৌধুরী - সিনিয়র সাংবাদিক (সাবেক বিবিসি বাংলা); সৈয়দ বদরুল আহসান, সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক; আশেকুন নবী চৌধুরী - সম্পাদক প্রটেক্ট বাংলাদেশ ও সাবেক প্রেস মিনিস্টার; ঊর্মি মাজহার - সিনিয়র সাংবাদিক; মাসুদা ভাট্টি - সিনিয়র সাংবাদিক; সৈয়দ আনাস পাশা - সিনিয়র সাংবাদিক সম্পাদক সত্যবাণী; হামিদ মোহাম্মদ - সিনিয়র সাংবাদিক, কবি; সুজাত মনসুর - সাংবাদিক কলামিস্ট গবেষক; দিলু নাসের - সাংবাদিক, কবি, ছড়াকার; ছামির মাহামুদ - সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিলেট জেলা প্রেসক্লাব; সাঈম চৌধুরী - সম্পাদক, বিলেত; আহাদ চৌধুরী বাবু- সিনিয়র সাংবাদিক; সুবাস দাশ - সিনিয়র সাংবাদিক; সুশান্ত দাশ গুপ্ত- সম্পাদক, প্রকাশক দৈনিক আমার হবিগঞ্জ; মিল্টন রহমান - সিনিয়র সাংবাদিক, কবি; তানভীর আহমেদ - প্রধান সম্পাদক, পলিটিকা নিউজ; জুয়েল রাজ, সম্পাদক ও প্রকাশক ব্রিকলেন; মকিস মনসুর চেয়ারম্যান ইউকে বিডি টিভি; কামরুল আই রাসেল -রিপোর্টার, চ্যানেল এস লন্ডন; আফজাল হোসেন - সম্পাদক আই নিউজ; ঈশা খান রাশেদ হেড অব মাল্টিমিডিয়া আই নিউজ; আমিনুল হক ওয়েস - সিইও ফোকাস টিভি; আজিজুল আম্বিয়া - সভাপতি যুক্তরাজ্য অনলাইন প্রেসক্লাব; অপু রায় - গ্রাফিক্স ও ওয়েব পরিচালক, ব্রিকলেন নিউজ; শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল - সম্পাদক ব্রিজবাংলা নিউজ।
সুয়েজ মিয়া - সম্পাদক ভয়েজ অব টাওয়ার হ্যামলেটস; অর্জুন মান্না, সম্পাদক এন ই নিউজ; সুমন দেবনাথ - সাংবাদিক কলামিস্ট; প্রশান্ত দাশ সুশান্ত - সাংবাদিক, কলামিস্ট; মোহাম্মদ কলন্দর তালুকদার - সাংবাদিক ব্রেডফোর্ড; ড. আনিসুর রহমান আনিস - সাংবাদিক, কলামিস্ট; আব্দুল কাদের চৌধুরী মুরাদ- সিনিয়র সাংবাদিক; শিব্বির আহমেদ শুভ - সাংবাদিক, ব্রানলি, ম্যানচেস্টার; আশরাফুল ওয়াহিদ দুলাল - সাংবাদিক, বার্মিংহাম; নাহিদ আহমেদ জায়গীদার - ফটো জার্নালিস্ট; শাহ শামীম আহমদ - সিনিয়র সাংবাদিক, কবি; আবুল আজাদ - সাংবাদিক, লিভারপুল; শেখ আছাবুর রহমান ছুরত - সিনিয়র সাংবাদিক, লিভারপুল; জিয়া উদ্দিন তালুকদার - সাংবাদিক, বার্মিংহাম; সৈয়দ সাদেক আহমেদ - সম্পাদক ৭১ নিউজ, ওল্ডহ্যাম; মিজানুর রহমাম মিরু- টিভি প্রেজেন্টার; মুকিত চৌধুরী সেতু - চেয়ারম্যান টিভি ২১; নুরুন্নবী আলী- সম্পাদিক এন এল ২৪; সৈয়দ হিলাল সাঈফ - সাংবাদিক ও ছড়াকার; আলী বেবুল - বিশেষ প্রতিনিধি, ম্যাপ টিভি; অভিষেক জিকু- সাংবাদিক, লন্ডন; রুমি হক - সাংবাদিক, স্বদেশ বিদেশ লন্ডন; পলিন রহমান - সাংবাদিক, কলামিস্ট; ড. জয়নুল আবেদিন রোজ - দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার; সোহেল সরকার - দৈনিক সোনালী সময়; সারোয়ার কবির - সাংবাদিক, লন্ডন; আবু সুফিয়ান - সাংবাদিক, লন্ডন; জুবায়ের আহমেদ - সাবেক ডিবিসি প্রতিনিধি, লন্ডন; আবু সাঈদ চৌধুরী সাদী - সাংবাদিক, লিভারপুল।
আপনার মন্তব্য