নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জুলাই, ২০১৭ ১৬:১৭

আওয়ামী লীগ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, মান্নার ভিন্ন সুর

নিজের রাজনৈতিক জীবনে একসময় আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ায় নিজেকে ‘বেকুব’ বলার এক দিন পর সুর পালটেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। ওটা ছিল ‘রসিকতা’, বলছেন মান্না। একই সঙ্গে বলছেন, প্রায় ৩ দশকে আওয়ামী লীগ ও ওই দলের নেতাদের কাছ থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন।

রোববার (১৬ জুলাই) ফেসবুকে নিজের বক্তব্যের এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না।  

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মান্না বলেছিলেন, “নৌকায় (আওয়ামী লীগ) তো আমিও ছিলাম। ড. কামাল নৌকা থেকে নেমেছেন, সেই নৌকায় আমিও চড়েছি। বেকুব না হলে করে এরকম!”

ফেসবুকে মান্না লিখেছেন, গোলটেবিল আলোচনায় গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ঢাকা-চট্টগ্রামের রাস্তা পানিতে ডুবে থাকার প্রসঙ্গ তুললে তিনি রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘এখন নৌকাই ভরসা’। তিনিও যে এক সময় নৌকা প্রতীকের দল আওয়ামী লীগে ছিলেন, সে কথা সুব্রত চৌধুরী মনে করিয়ে দিলে ড. কামালের প্রসঙ্গ আসে। তখনই তিনি রসিকতা করে নিজেকে বেকুব বলেছিলেন।   

“এটা রসিকতার জবাবে একটা রসিকতা। আ. লীগে যোগ দেওয়াটা একটা বেকুবি ছিল- তা আমি বোঝাইনি। আ. লীগে যোগ দেওয়াই ভুল ছিল- আমি এখনো তা মনে করি না। কিছু পাওয়ার ধান্দায় আমি তো ওখানে যোগ দিইনি।”

আর প্রায় তিন দশক আওয়ামী লীগে থেকে ‘ওই দলের নেতার কাছ থেকে’ অনেক কিছু শিখেছেন বলেও ‘আন্তরিক স্বীকারোক্তি’ দিয়েছেন মান্না।

মাহমুদুর রহমান মান্না লিখেন,

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে গোলটেবিলে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌ সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের সমালোচনা করে বলছিলেন, এমন উন্নয়ন হয়েছে যে এখন ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তাও পানিতে ডুবে যায়।

আমি তার কথার ফাঁকেই রসিকতা করে বললাম, এখন নৌকাই ভরসা। উনি সাথে সাথেই বললেন, আপনি তো সেই নৌকায় ছিলেন।

আমি তখন কিছু বললাম না। আমার সময় বললাম, মি, সুব্রত চৌধুরীর নেতাও নৌকায় ছিলেন।আমার চেয়ে বেশীদিন। তবে উনি জ্ঞানী মানুষ। আমার আগেই নেমে গেছলেন। আমি বেকুব। বুঝি নি। ওনার ছেড়ে যাওয়া নৌকায় চড়েছিলাম।

এটা রসিকতার জবাবে একটা রসিকতা। আ লীগে যোগ দেওয়াটা একটা বেকুবি ছিল আমি তা বোঝাই নি।

আ লীগে যোগ দেওয়াই ভুল ছিল আমি এখনো তা মনে করি না। কিছু পাওয়ার ধান্দায় আমি তো ওখানে যোগ দেই নি।

আর একটা আন্তরিক স্বীকারোক্তি; প্রায় ৩ দশকে আমি ঐ দল এবং দলের নেতার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিও।

শেখ হাসিনার বর্তমান শাসনামলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আসামি হয়ে বছরখানেক কারাগারে কাটিয়ে আসা মান্না শনিবারের আলোচনা সভাতেও আওয়ামী লীগের কড়া সমালোচনা করেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন মাহমুদুর রহমান মান্না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদকও হন তিনি। এরআগে জাসদে ছিলেন মান্না। জাসদ ভাঙার পর বাসদে যোগ দেন তিনি, দুই বার ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন।

২০০৭-০৮ সালের জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের পদ হারান।

গত ১৩ জুলাই রাতে আ স ম রবের বাড়িতে গিয়ে পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার পর শনিবারের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ‘স্বরূপ’ বুঝতে তার বেশি সময় লাগেনি।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর আসার পর রোববার সকালে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত