সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০২:৪০

লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বগুড়ায় সরকারের সাড়ে ৪০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করায় সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং জাহানারা রশিদ নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) আমিনুল ইসলাম আদমদীঘি থানায় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরস্পর যোগসাজশে সরকারি আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে এ মামলা দেন।

দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক আবদুল আজিজ ভুঁইয়ার তত্ত্বাবধানে ও বগুড়ার উপপরিচালক আনোয়ারুল হকের তদারকিতে অনুসন্ধান শেষে বাদী মামলাটি করেন। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মামলাটি রেকর্ড হয়েছে।

মামলা সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রানীনগর বাজারে বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের পাট ক্রয় কেন্দ্র ছিল। ব্রিটিশ সরকারের সময় ২ একর ৩৮ শতকের জমিটি সুরুজ মল আগরওয়ালা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হুমুক দখল করা হয়েছিল। বগুড়া শহরের কালিতলা এলাকার মৃত হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদ গত ২০১০ সালের ১৩ মে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় থেকে জমিটি তিন বছরের জন্য লিজ নেন। প্রতি বছর লিজ মানি ধার্য ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। জাহানারা রশিদ এক বছর লিজ মানি পরিশোধ না করেই ওই জমি কেনার জন্য ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সরকারি জমি স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিতে বা বিক্রি করতে উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের নিয়ম থাকলেও সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী তা করেননি। তিনি তার পরিচিত জাহানারা রশিদের কাছে দরপত্র ছাড়াই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। লতিফ সিদ্দিকী তার একক সিদ্ধান্তে ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৫ টাকা মূল্যের জমিটি মাত্র ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৪ টাকায় বিক্রি করেন। এতে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা ১১ পয়সা আর্থিক ক্ষতি হয়।

এদিকে মূল্যবান ওই জমিটি কম দামে বিক্রি করায় সংক্ষুব্ধ হয়ে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইসমাইল হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। পরে জাহানারা রশিদ সুপ্রিম কোর্টে রিট করলে তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়। দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৪ সাল থেকে তদন্ত শুরু করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, আসামি সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ব্যক্তিস্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। এতে সাবেক মন্ত্রী ও জাহানারা রশিদের পরস্পর যোগসাজশ ছিল। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকালে বগুড়ার আদমদীঘি থানায় এজাহার দাখিল করা হয়।

আদমদীঘি থানার ওসি আবু সাঈদ মো. ওয়াহেদুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত