নিজস্ব প্রতিবেদক

০৪ জুলাই, ২০১৫ ০৩:৪৪

চার বছর পর মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন আজ: কারা আসছেন নেতৃত্বে?

২০১১ সালের ৯ জুলাই গঠিত হয়েছিলো সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। এরপর এক বছরের জন্য গঠিত কমিটি কাটিয়ে দিয়েছে চার বছর। দীর্ঘ চার বছর পর আজ শনিবার (৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি।

মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির নেতাদের সরিয়ে আজ নতুন নেতৃত্বের হাতে উঠবে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ। কারা আসছেন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে? কাদের হাতে উঠছে ছাত্রলীগ- এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র। বিশেষত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকিয়ে আছেন আজকের সম্মেলনের দিকে।

সম্মেলন উপলক্ষ্যে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে গেছে বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ ও আগামী কমিটির পদপ্রত্যাশীদের মাঝেও। আবার পদের দখল নিয়ে আভ্যন্তরীন বিবাদ, গ্রুপিংও চলছে সমানতালে।

মহানগর ছাত্রলীগ নেতারা জানান, আজকের সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকি নাজমুল আলম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর ব্যাপারীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

জানা যায়, মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন উপলক্ষ্যে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কিছু নেতাও তৎপর হয়ে উঠেছেন। নিজের অনুসারীদের ছাত্রলীগের পদ-পদবি পাইয়ে দিতে তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা। এছাড়া মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতারাও নিজেদের অনুসারীদের ছাত্রলীগের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে।

জানা যায়, প্রাথমিক অবস্থায় কেবল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষিত হবে। এরপর হবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এই দুই পদের জন্য ইতোমধ্যে ৫৯ জন প্রার্থী নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা দিয়েছেন।

সিলেটের ছাত্রলীগের রাজনীতি মূলত নিয়ন্ত্রণ করে আসছে চারটি গ্রুপ। এই চার গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন ৫ আওয়ামী লীগ নেতা। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের নেতৃত্বাধিন তেলিহাওর গ্রুপ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নেতৃত্বাধিন দর্শন দেউড়ি গ্রুপ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ এবং যুব ও ক্রড়া সম্পাদক রনজিত সরকারের নেতৃত্বাধিন টিলাগড় গ্রুপ ও উপ দপ্তর সম্পাদক বিধান কুমার সাহার নেতৃত্বাধিন কাশ্মির গ্রুপই এতোদিন নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলো ছাত্রলীগ।

জেলা ও মহানগর কমিটির পদ-পদবিও এই চারগ্রুপের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করা দেওয়া হয়। এই ভাগবাটোয়ার হিসেবেই জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব রয়েছে তেলিহাওর গ্রুপ ও টিলাগড় গ্রুপের হাতে। সে হিসেবে মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্ব এবারও দর্শন দেউড়ি গ্রুপ ও কাশ্মীর গ্রুপের হাতে থাকার কথা। মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি-সম্পাদকও এই দুই গ্রুপের।

তবে এই ভাগবাটোয়ারায় এবার এবার ভাগ বসাতে চাইছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে নিজ অনুসারীদের বসাতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি। এদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক পিযুষ কান্তি দে'ও মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন উপলক্ষ্যে নিজস্ব প্যানেল ঘোষণা করেছেন। তেলিহাওর গ্রুপ এবং টিলাগড় গ্রুপও মহানগর ছাত্রলীগে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

ফলে মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গড়তে গিয়ে বেশ বেগই পেতে হবে কেন্দ্রীয় নেতাদের। কমিটি গঠন নিয়ে সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত তরফদার বলেন, সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, প্রকৃত ছাত্র, অবিবাহিত এবং যোগ্য, মেধাবী ও পরীক্ষিত নেতারাই ছাত্রলীগের কমিটিতে ঠাঁই পাবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত