সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১৪:১৩

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি ও জামায়াত

উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। বিএনপি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার পর গত রাতে। আর জামায়াত প্রথমে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষমূহূর্তে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটি সোমবার রাতে বৈঠক করে বর্তমান সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বর্জনের ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দলটির স্থায়ী কমিটির গত রাতের ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রহসনের অংশীদার চায় না বিএনপি। সে কারণে ৮ মে থেকে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান সম্পর্কে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অস্পষ্টতায় ছিলেন বিএনপির তৃণমূলের নেতারা। কারণ, বিএনপি নেতৃত্ব এত দিন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। এরই মধ্যে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কমবেশি বিএনপির ৪৫ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে যারা ভোটের মাঠে নেমেছেন, তাদের ব্যাপারে বিএনপি কতটা কঠোর হতে পারবে, এখন সেই আলোচনা সামনে এসেছে।

যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূলের নেতাদের যারা প্রার্থী হচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবশ্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হবে ২২ এপ্রিল।

কিন্তু দলটির এই বার্তা ভোটে আগ্রহী তৃণমূলের নেতাদের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এদিকে, জামায়াতে ইসলামীও প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ঈদুল ফিতরের পরপরই দলটি তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টানোর নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে জানিয়ে দিয়েছে। এর আগেই জামায়াতের অন্তত ২২ জন নেতা প্রথম ধাপের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে দলটির নেতারা বলছেন।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারাও বলছেন, দলের যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশনা পাঠানো হবে।

উপজেলার ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিএনপির যুক্তি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনও হবে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। তারা অংশ নিলে আওয়ামী লীগই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েছে দলটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাদের দলের পুরোনো অবস্থান। তারা সেই অবস্থানেই অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির যে ৪৫ জন নেতা প্রার্থী হয়েছেন, এই সংখ্যাটা বেশি নয় বলেও মনে করছে বিএনপি। গয়েশ্বর রায় বলেন, তারা পর্যালোচনা করে দেখেন, তৃণমূলে কর্মীদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন করার আগ্রহ সেভাবে নেই।

এমন বক্তব্যের ব্যাপারে যুক্তি হিসেবে গয়েশ্বর রায় বলেন, সরকারবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন ও ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে তাদের লাখ লাখ নেতা–কর্মী মামলায় জর্জরিত। ২৭ হাজার বেশি কারাগারে গেছেন। ফলে তৃণমূলের কর্মীরা নতুন করে মামলা বা নির্যাতনের মুখোমুখি হতে চান না। এই পরিস্থিতি অগ্রাধিকার পেয়েছে  উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত