সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ২২:৪৪

ফের ক্ষমতার দ্বন্দ্বে রওশন ও কাদের

জাতীয় পার্টি

আবারও জাতীয় পার্টিতে (জাপা) জি এম কাদের ও রওশন এরশাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। বুধবার হঠাৎ​ করেই দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ছেলে সাদ এরশাদসহ ১৬ জন নেতাকে পদোন্নতি দিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রওশন এরশাদ বলেছেন, সম্মেলনে অর্পিত দায়িত্ব ও প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সংগঠনের কার্যক্রম গতিশীল করার স্বার্থে এই পদায়ন করা হলো।

এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কার্যালয়ে বিবৃতিতে এ পদোন্নতিকে বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে তা প্রচার না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রওশন এরশাদ তাঁর ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ ও দলের পুরোনো নেতা এম এ ছাত্তারকে কো–চেয়ারম্যান করেন। এ ছাড়া ১১ জনকে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করেন। তাঁরা হলেন দেলোয়ার হোসেন খান, খালেদ আখতার, ইকবাল হোসেন (রাজু), নূরে হাসনা লিলি চৌধুরী, রওশন আরা মান্নান, ফকরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কাজী মামুন, মাহজাবিন মুর্শেদ, নুরুল ইসলাম (নুরু), নুরুল ইসলাম (ওমর) ও আরিফুর রহমান খান। এর বাইরে আমানত হোসেন ও মো. ইয়াহিয়াকে ভাইস চেয়ারম্যান এবং জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ও মো. রেজাউল করিমকে যুগ্ম মহাসচিব নিযুক্ত করা হয়। এই মনোনয়ন ও সাংগঠনিক নির্দেশ অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রধান পৃষ্ঠপোষক (রওশন এরশাদ) এমন কিছু করতে পারেন না।

গত ২৮ ডিসেম্বর জাপার কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর ৮ জন কো-চেয়ারম্যান ও ৩৭ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। তাতে রওশনের তালিকায় থাকা নেতাদের নাম ছিল না।

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ​ করে রওশন এরশাদের এই পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনায় জ্যেষ্ঠ নেতারা ভড়কে গেছেন। তাঁরা মনে করছেন, রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরকে ঘিরে দলে ভেতরে যে দুটি পক্ষ তৎ​পর, এ ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। দলের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব নিয়ে কাদের ও রওশনের মধ্যে যে বিরোধ চলছে, তা এখনো মেটেনি।

এবারের সম্মেলনে জি এম কাদের চেয়ারম্যান ও রওশন এরশাদকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক করা হয়। অনেকে মনে করছেন, রওশনকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদে অধিষ্ঠিত করে কার্যত দলের কর্তৃত্ব থেকে তাঁকে কৌশলে দূর সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে পদবঞ্চিত নেতারা রওশনের পক্ষ নিয়ে তৎ​পর হয়েছেন।

১৬ নেতাকে পদোন্নতি দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো রওশন এরশাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি জাপার চেয়ারম্যান জানতেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব মসিউর রহমান বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তিটি আমাকে দিয়েছিলেন। আমি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি রেখে দিয়েছেন।’

মসিউর রহমান বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান, কো–চেয়ারম্যান, প্রধান পৃষ্ঠপোষকসহ প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

এ পদোন্নতিকে বিভ্রান্তিকর, প্রচার না করার অনুরোধ জাপা চেয়ারম্যানের
এদিকে সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে বিবৃতি পাঠিয়ে এ পদোন্নতিকে বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে তা প্রচার না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, এভাবে কোনো নিয়োগ দেওয়ার এখতিয়ার প্রধান পৃষ্ঠপোষকের নেই। জাতীয় পার্টির নবম কাউন্সিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক পার্টির বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রদানের ক্ষমতা একমাত্র পার্টি চেয়ারম্যানের, অন্য কারও নেই। বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী এবং জনসাধারণকে বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ জা​নানো হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত