নিউজ ডেস্ক

০৭ অক্টোবর, ২০১৫ ১৫:৩৮

সুন্দরবন রক্ষায় সিপিবি-বাসদের অভিযাত্রা

সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক রামপাল ও ওরিয়ন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে ‘ঢাকা-সুন্দরবন অভিযাত্রা’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। 

আজ বুধবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে পুরানা পণ্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনের মৈত্রী সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতারা। 

কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আগামী ১৩ অক্টোবর বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে এ অভিযাত্রা শুরু করবে রাজনৈতিক দল দুটি। ১৭ অক্টোবর বিকেল ৩টায় বাগেরহাটে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে অভিযাত্রা কর্মসূচি। 

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, পরিবেশের ওপর অনুপ্রেরণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জাতিসংঘের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। কিন্তু দেশের চিরহরিৎ বন সুন্দরবন ধ্বংস করে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে একদিন পরিবেশ ধ্বংসকারীর দায়ও নিতে হবে তাকে। 
 
সেলিম বলেন, গোটা বিশ্বের জলবায়ু আজ বিপন্ন। সেখানে বাংলাদেশের ফুসফুস বলে বিবেচিত সুন্দরবন আজ দেশি-বিদেশি মুনাফাখোরদের কবলে পড়ে ধ্বংসের মুখোমুখি। 
 
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সঙ্কট সমাধানে সহজ, টেকসই পথে না গিয়ে সরকার বারবারই ভুল নীতি গ্রহণ করেছে। এর ফলে বিদ্যমান সঙ্কট ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকার শুধু সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে তা নয়, দেশকে এক বড় বিপর্যয়ের দিকেও ঠেলে দেবে। 
 
সিপিবি সভাপতি বলেন, বিদ্যুৎ উপাদনের বহু বিকল্প থাকলেও সুন্দরবনের বিকল্প নেই। তাই সুন্দরবন ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ১৩-১৭ অক্টোবর ‘ঢাকা-সুন্দরবন অভিযাত্র’ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। 
 
তিনি বলেন, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআই)-২০১০ গাইডলাইন অনুযায়ী ভারতে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না। দেশটি কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুতে তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প ইতিমধ্যে বাতিল করেছে। 
 
অথচ ভারতের ‘ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি)’ এবং বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাবিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হলে তা নিশ্চিতভাবেই সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে।
 
প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় সকল দেশপ্রেমিক, সচেতন জনগণকে এ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। 
 
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বজলুর রশিদ ফিরোজসহ দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতারা। 
 
অভিযাত্রাকালে সিপিবি-বাসদ মানিকগঞ্জ, গোয়ালন্দ, ফরিদপুর, মধুখালী, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, দৌলতপুর, খুলনা এবং বাগেরহাটে সমাবেশ করবে।
 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত