নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ অক্টোবর, ২০১৫ ২১:৩৮

মেয়াদ শেষ, তবু কমিটি পুর্ণাঙ্গ করতে পারেনি জেলা ছাত্রলীগ

গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ঘোষিত হয়েছিলো সিলেট জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি। এক বছর মেয়াদের এই কমিটি এক বছর এক মাস অতিক্রম করছে। কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি জেলা ছাত্রলীগ। গঠিত হয়নি উপজেলা কমিটিও। নেই তেমন কোনো কার্যক্রমও।

জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল নেতাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এমন স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কমিটির কারণে জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায় ন। শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি, নিজাম উদ্দিন, রাশেদুল ইসলাম রাসেদ, হোসাইন আহমদ চৌধুরী ও আলী হোসেনকে সহ সভাপতি, রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক, কামরুল ইসলাম ও সঞ্জয় চৌধুরী যুগ্ম সম্পাদক, মুহিবুর রহমান ও দিদার হোসেন সাজুকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে গঠিত হয় ১০ সদস্যের কমিটি। এক বছরেরও বেশী সময় ধরে চলা এ কমিটি এখন পর্যন্ত কোন উপজেলা কমিটি গঠন বা সম্মেলন আয়োজন করতে পারেনি। দৃশ্যত বিভিন্ন জাতীয় দিবসে পুস্পস্থবক অর্পণ আর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে জেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম।

মেয়াদ শেষেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে না পারা প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের জন্য সারা দেশের জেলা কমিটি অনুমোদন স্থগিত করেছিল কেন্দ্র। তখন প্রস্তুতি থাকা স্বত্ত্বেও কাজ করা যায়নি। এখন নতুন কমিটি হওয়ার পর আমরা তাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য পাঠাব। ইতিমধ্যে আমরা কমিটি তৈরির জন্য গ্রাউন্ড ওয়ার্ক শুরু করেছি।

মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও পূর্নাঙ্গ কমিটি না দিতে পারা ব্যর্থতা কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আসলে সবকিছু আমাদের হাতে নাই, অনেক সময় কেন্দ্রের উপর নির্ভর করতে হয়'।

কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন "কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক যেহেতু সিলেটের সন্তান তাই তাকে শীঘ্রই আমরা বড় সংবর্ধনা দিব, এর পর পরই পূর্ণাঙ্গ কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটবে।"

উপজেলা কমিটি গঠন করতে না পারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী ২৮ অক্টোবর কোম্পানিগঞ্জ থেকে উপজেলা পর্যায়ের কর্মীসভা হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলার অভ্যন্তরিন সমস্যা সমাধান করেছি। ছাত্রদল শিবিরের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে উদ্যোগ নিচ্ছি। এসব কারণে সব উপজেলায় কমিটি করতে দেরি হচ্ছে। তবে শীঘ্রই তা করা হবে। "

একই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাশেদ সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন- " বিভিন্ন গ্রুপের নেতারা এক না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নি আগে, পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলনের জন্য পিছিয়ে যায় কার্যক্রম। এখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে।

তিনি জানান, বিভিন্ন সমস্যায় কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। কোম্পানিগঞ্জ থেকে কর্মি সভা শুরু হবে। সব পক্ষের নেতারা এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য উদগ্রীব। আশা করি নভেম্বরের মধ্যেই হবে। "

উল্লেখ্য কানাইঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে জেলা ছাত্রলীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধমে এই কমিটি স্থগিত করে। অপরদিকে একই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধমে জকিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে জেলা ছাত্রলীগ।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়া বিষয়ে জেলা কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অভিযোগ আছে জেলা কমিটির একেক নেতা নগরে বিদ্যমান একেক গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকায় পুরো সমন্বয়হীনতার কারণে পুরো মেয়াদকালেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নি।

তবে নিজেদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই বলে জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী। তিনি বলেন, সভাপতি সামাদ ভাইয়ের সাথে মিলেই আমি কাজ করছি। পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ এখন ঐক্যবদ্ধ।

বর্তমানে ছাত্রলীগের কার্যক্রম সম্পর্কে রাশেদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা কমিটি পুনর্গঠন ছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ও জাতীয় দিবস পালনই মূলত কার্যক্রম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত