০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:২১
যুক্তরাজ্যের চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ডিগ্রিগুলোর একটি এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেছেন সিলেটের সন্তান ডা. মুহাম্মদ আবু তাহের।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অফ ফিজিসিয়ান্স অব ইউনাইটেড কিংডম থেকে এমআরসিপি (UK) ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। —যা কঠিন তিন ধাপের পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয়। এক বছর পর সম্প্রতি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই ডিগ্রি গ্রহণ করেন।
ডা. মুহাম্মদ আবু তাহের বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে এ প্রাপ্তি। যার অনুগ্রহ প্রকাশ করে শেষ করার নয়। আমরা জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করি—পারিবারিক শিক্ষা, দুনিয়াবি জ্ঞান, ধর্মীয় জ্ঞান। কিন্তু মহান আল্লাহ যার নসীবে এই সম্পদ না রাখেন, সে কখনো জ্ঞান অর্জন করতে পারে না।”
ডা. মুহাম্মদ আবু তাহেরের চিকিৎসা শিক্ষা ও পেশাগত পথচলা: ডাক্তার হয়ে তিনি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যে মানবজাতির সেবায় রয়েছেন।
“এমআরসিপি (UK) শুধু একটি পরীক্ষা নয়; এটি যুক্তরাজ্যে কনসালট্যান্ট হওয়ার পথে অত্যাবশ্যক সোপান। এখন আল্লাহর ইচ্ছায় কনসালট্যান্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই পথচলা সহজ ছিল না; নিজের পিতামাতার অক্লান্ত পরিশ্রম, পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং সুহৃদ মানুষের দোয়া ও সহায়তায় আজকে এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।
শিক্ষাজীবনের শুরু—গ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে: তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আখাখাজানা গ্রামের মৃত সফিকুর রহমানের ছেলে ও মৃত জফর আলীর নাতি। ছোটবেলা থেকে ভদ্র,নম্র ও অত্যন্ত মেধাবী ডা. তাহের ২০০১ সালে কুড়ারবাজার দ্বি-পাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি ও ২০০৩ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
পরে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। এরপর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (BCPS) থেকে এফসিপিএস (মেডিসিন) পার্ট-১ পাস করে ট্রেনিং সম্পন্ন করেন।
ফাইনাল পরীক্ষার আগে যুক্তরাজ্যে চাকরির সুযোগ পাওয়ায় তিনি সেখানে মেডিসিনে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে সফলভাবে এমআরসিপি (UK) সম্পন্ন করেন।
শিক্ষাজীবনে বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমার উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন চাচাতো ভাই—আমেরিকা প্রবাসী তারেক আহমদ। তিনি মানসিক, আর্থিক ও নানানভাবে যে অবদান রেখেছেন, তা বলে শেষ করা যাবে না। যে কারণে বড় ভাই তারেক ভাইয়ের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ। কেবল আর্থিক সহযোগিতাই নয়—উনি আমার জীবনের এক বিশাল অনুপ্রেরণার নাম। ছোটবেলা থেকে তাঁর সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনা, সাহস, মানসিক শক্তি ও তার দেখানো পথ আমাকে লক্ষ্য স্থির করতে এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে শিখিয়েছে।”
তিনি আরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন—নিজ মা-বাবা ,চাচাতো ভাই লায়েক আহমদ, এবং পরিবারের সকল সদস্যের প্রতি। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকল শিক্ষকের প্রতিও তিনি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
২০১৭ সালে বিয়ে করা তাহেরের স্ত্রীও ডাক্তার।
আপনার মন্তব্য