সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ মে, ২০১৭ ১৮:৩১

‘পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চার দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে ৫০ লাখ খামারি’

‘২২ টাকার একদিনের পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুরগির খাদ্যের দামও। হঠাৎ করে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের ৫০ লাখ খামারি পড়েছেন বিপাকে। খামার প্রকল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার দাম বেধে দিলেও তা মানছেন না সিপি-কাজিসহ হ্যাচারি মালিকরা। যার প্রভাবে বাধ্য হয়েই নিজেদের খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন অনেকে। তাতে দিনদিন বাড়ছে বেকারত্ব।’

মঙ্গলবার (১৬ মে) সকালে সিলেটের হুমায়ুন রশিদ চত্বরে পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ সিলেট বিভাগ আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালীন সমাবেশে এমন তথ্য উপস্থাপন করেন পোল্ট্রি খামারিরা। এ সময় সিলেট বিভাগের ৪ জেলার সহস্রাধিক খামারি উপস্থিত ছিলেন। পরে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আজম খানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা।

মানববন্ধন চলাকালীন এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের বিভাগীয় সমন্বয়ক ফয়েজ রাজা চৌধুরী, সদস্য সচিব জাহেদুল হক, সিলেট জেলা সভাপতি হোসেন আহমদ বাবু, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি শেখ মাহমুদুল হাসান, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি কাওছার আহমদ শামীম, সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহানসহ বিভাগের সকল উপজেলার নেতৃবৃন্দ।

খামারিরা জানান, বাজারে বর্তমানে প্রতিটি লেয়ার বাচ্চা একশ' টাকা থেকে ১১০ টাকা, ব্রয়লার ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, কক ২৮ থেকে ৩০ টাকা এবং সোনালি ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে ব্রয়লার ও লেয়ার বাচ্চা ৩০ থেকে ৩২ টাকা, কক ৯ থেকে ১০ টাকা এবং সোনালি ১২ থেকে ১৩ টাকা দরে বিক্রি হয়।

খামারিরা আরও জানান, ডিমের মূল্য, ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা এবং অন্যান্য বিনিয়োগের লাভসহ একটি বাচ্চার উৎপাদন খরচ সর্বোচ্চ ২২ টাকা পড়ে। তারপরও উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ দিয়ে ব্রয়লারের একদিনের বাচ্চা ৩০ টাকা ও লেয়ার ৩২ টাকা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার।

কিন্তু জনস্বার্থ না দেখে হ্যাচারি মালিকরা তার বিপরীতে অবস্থান নেন। যে কারণে গ্রাহক পর্যায়েও ডিম এবং মুরগির মাংসের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া গত এক বছরে দেশি-বিদেশী হ্যাচারি মালিকরা ৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নিয়েছেন খামারিদের কাছ থেকে।

পোল্ট্রি খামার রক্ষা পরিষদের বিভাগীয় সমন্বয়ক ফয়েজ রাজা চৌধুরী বলেন, খামারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ডিম ও মাংস উৎপাদন করছেন। কিন্তু বাজারে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঋণ ও সুদের জালে আটকা পড়ছেন। হ্যাচারি মালিকরা অল্প দিনে কোটিপতি হয়ে যাচ্ছেন। সরকারকে পূর্বের নির্ধারিত মূল্যে বাচ্চা সরবরাহ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সদস্য সচিব জাহেদুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন প্রত্যেক বাড়ির আঙ্গিনায় খামার সৃষ্টি কর, স্ব স্ব কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর। তাঁর এমন কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের শিক্ষিত যুবসমাজ পোল্ট্রি খামার সৃষ্টি করেছিল। আজ দেশি-বিদেশি কয়েকটি কোম্পানি বাচ্চা মুরগির দাম বাড়িয়ে এই খামারিদের বেকার করার ষড়যন্ত্র করছে। তাই যুব সমাজ কিংবা খামারিদের রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত