সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ২১:৪২

জৈন্তাপুরে আ. লীগ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার বাদীকে হুমকির অভিযোগ

সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

সিলেটের জৈন্তাপুরে প্রবাসী হোসেন আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে বাদী ও সাক্ষীদেরকে হুমকি এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী। লিয়াকত আলী জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মল্লিফৌদ গ্রামের মৃত ওয়াজিদ আলীর ছেলে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জৈন্তাপুর উপজেলার লামা মহাইল গ্রামের মো. আমিন আহমদ এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আমিন আহমদ বলেন, তার প্রবাসী ভাই হোসেন আহমদ দেশে ছুটিতে এসে ব্যবসার জন্য তাকে কিছু অর্থ দেন। এ অর্থ দিয়ে ব্লু-প্লেনেট হসপিটালিটি কোম্পানি লি: এর মালিকানাধীন সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর আসামপাড়া মৌজায় কিছু জমি ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়িক অংশীদার হন। গত ৩ ডিসেম্বর তিনি এবং তার দুই ভাই হোসেন আহমদ ও শামীম আহমদসহ ব্যবসায়িক অংশীদারদেরকে নিয়ে তাদের ক্রয়কৃত জমি পরিদর্শনে যান। সেখানে যাওয়ার পর লিয়াকত আলী, মুসলিম আলী, ইসমাইল আলীসহ তাদের সঙ্গীয়রা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় তিনি ও তার দুই ভাই ও ব্যবসায়িক অংশীদারসহ প্রায় ২০ জনের অধিক রক্তাক্ত গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ডিসেম্বর রাত ৮ টার দিকে হোসেন আহমদ মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত ৬ ডিসেম্বর জৈন্তাপুর মডেল থানায় লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা (মামলা নং-০৬) দায়ের করেন।

তিনি বলেন, লিয়াকত আলী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে তাকে ও মামলার সাক্ষীদেরকে হত্যার হুমকি এবং মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও মামলার সাক্ষীদেরকে ইতোমধ্যে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি শুরু করে দিয়েছে। এতে তারা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পাশাপাশি এই ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রং দিয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আদৌ এটি কোন রাজনৈতিক ঘটনা নয়।

আমিন আহমদ বলেন, এলাকায় অভিযোগ আছে যে, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রায় ১৮ বছরের সাধারণ সম্পাদক ও নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মখলিছুর রহমান দৌলা হত্যায় লিয়াকত আলীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। লিয়াকত আলীর আপন মামা শ্বশুর বিলাল উদ্দিন ও সিরাজ উদ্দিন দৌলা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি পূণ:তদন্তের জন্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড প্রশাসনের কাছে লিখিত দাবিও জানিয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেন লিয়াকত আলী জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। তিন উপজেলায় পাথর কোয়ারী গুলো থেকে সে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে। পাথর কোয়ারী ছাড়াও জৈন্তাপুর উপজেলা জলমহাল গুলোর নিয়ন্ত্রনকারীও সে। তার অনুগত কয়েকটি মৎস্যজীবী সমিতি দিয়ে নাম মাত্র মূল্য দিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনার নামে মেধার হাওর, বর্ণিবিল, চাতলা বিলসহ সকল জলমহাল তার দখলে নিয়ে যায়। এছাড়াও অবৈধ উপায়ে লিয়াকত আলী এখন অনেক অর্থ-বিত্তের মালিক।  

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমিন আহমদ জানান, কাউকে হয়রানি করতে নয় তার ভাই হত্যার বিচার চাইতে মামলা করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতিপক্ষও তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করলেও এটা এখন পর্যন্ত কানাইঘাট থানায় তদন্তাধীন রয়েছে।  সংবাদ সম্মেলনে আমিন আহমদ ভাই হত্যার জন্য লিয়াকত আলীসহ তার সহযোগীদের ফাঁসির দাবি জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- এলাকার সিরাজুল হক সিরাই, আলাউদ্দিন, আতাউর রহমান, আব্দুল কাদির, ফারুক আহমদ, শাহেদ আহমদ, আনোয়ার হোসেন, কুতুব উদ্দিন, জাকারিয়া মাহমুদ, শামীম আহমদ, এরশাদুল আলম চৌধুরী, শামীম আহমদ, শাহীন আহমদ, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জসীম উদ্দিন প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত