সিলেটে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৮ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ, জিয়াউর রহমান ও বর্তমান বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন পাবলিক ভয়েস। শনিবার (২৪ মার্চ) নগরীর একটি হোটেলে বিকাল ৪ টায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের আহবায়ক মিফতাহ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এবং সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম ও পাবলিক বয়েসের সদস্য রুহুল কুদ্দুস হামজার পরিচালনায় প্রাণবন্ত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন,  জিয়াউর রহমান শুধু বিএনপির নেতা নয় তিনি জাতির নেতা। তিনি অনেক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন যা তিনি ছাড়া আর কারো পক্ষে তা পালন করা সম্ভব হতো না। পঁচাত্তরের সাত নভেম্বর জিয়াউর রহমান যদি দায়িত্ব না নিতে তাহলে বাংলাদেশ আজ কোথায় যেতো তা বলা শক্ত। আজকে প্রতিনিয়ত দেশে যে উন্নয়নের জোয়ারের কথা বলা হয় তার সূচনা হয়েছিলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে।

মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ২৭ মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি মাটির প্রদীপ হিসেবে জ¦লে উঠেছিলো। আর নয় মাসে সেই মাটির প্রদীপ একটা সূর্যে পরিণত হয়। এসময় তিনি বাংলাদেশে বর্তমান গণতন্ত্রের প্রতি আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি আজ সরে গেছে।

তিনি আরো বলেন, ভারত বা পাকিস্তানের মতো আলোচনার টেবিল বসে বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। বাংলাদেশর জন্ম হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রান্তরে। কিন্তু স্বাধীনতা ৩ মাসের মাথায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। বাংলাদেশের নাম আজ বিশে^র শীর্ষ স্বৈর-তান্ত্রিক দেশের প্রথম কাতারে উঠে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের এই স্বৈর-তান্ত্রিক পরিচয় খুবই দুঃখজনক।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপোষহীন নেত্রী থেকে খালেদা জিয়া আজ দেশ মাতায় পরিচিতি লাভ করেছেন। তৃতীয় বিশ্বে আজ তিনি এই নামেই পরিচিত। খালেদা জিয়াকে কারাগারে ঢুকিয়ে মনে করা হয়েছিলো বিএনপি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। কিন্তু যারা এই চিন্তা করে করে তাকে কারাগারে ঢুকিয়েছেন তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি এখন বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। তরুণরা যদি খালেদা জিয়ার নির্দেশ মতো কাজ করে তবে সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে। সবাইকে সেভাবেই কাজ করে যেতে হবে।

এসময় তিনি বলেন, পাবলিক ভয়েস হচ্ছে জনমত। এই জনমত আমাদের শক্তি। দেশের জনগণ যখন দেখবে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী তখন জনগণ স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসবে। আমাদের সামনে সেই সুদিন।

হাফিজ ইসমাইল আহমদের কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং জাসাসের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ভাষাসৈনিক অধ্যক্ষ মাসউদ খান।

এছাড়াও এতে উপস্থিত ছিলেন - সিলেটের বিভিন্ন পর্যায়ের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড.এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবু, বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কামাল আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, পেশাজীবী পরিষদ সিলেটে সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান, সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ লে. কর্নেল (অব) আলী আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সহকারী রেজিস্টার লোকমান আহমদ চৌধুরী এডভোকেট, পাবলিক ভয়েস সদস্য, ফজলে এলাহি পাপ্পু, শাকিলুর রহমান, মাসরুর রাসেল।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, বিএনপি নেতা সালেহ আহমদ খসরু, ডা. নাজমুল ইসলাম, সিসিক প্যানেল মেয়র ১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, ওলিদ তালুকদার প্রমুখ।

এর আগে শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন, সোহেল মাহমুদ, সোহেল আহমদ, আব্দুল আজিজ, মনজুর হোসেন মঞ্জু, রফিকুল বারী  নোমান,  দেওয়ান রেজওয়ান।