সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

২৮ জুন, ২০১৮ ১৬:০৮

কমরেড দ্বিজেন সোমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা

কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা কমরেড দ্বিজেন সোম এর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা, দালাল, পুঁজিবিরোধী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করার মধ্য দিয়েই কমরেড দ্বিজেন সোম এর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

বুধবার (২৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সুরমা মার্কেটস্থ এনডিএফ সিলেট জেলা কার্যালয়ে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ,আমলা, দালাল, পুঁজিবিরোধী আপোষহীন কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা কমরেড দ্বিজেন সোম এর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) সিলেট জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায়।

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ দাস চম্পুর পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, অর্থ-সম্পাদক আ. ছালাম, জাতীয় ছাত্রদল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রুপেল চাকমা, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আনছার আলী প্রমুখ।

সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, কমরেড দ্বিজেন সোম ছিলেন একজন দোকান কর্মচারী। ২য় বিশ্বযুদ্ধকালীন দুর্ভিক্ষের সময় কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে পরিচালিত চিকিৎসা টিমের আত্মত্যাগ ও মানুষের প্রতি দরদ দেখে কমরেড দ্বিজেন সোম কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন। তিনি ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন শ্রমিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রদান করেন। সিলেট অঞ্চলের অনেক রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু ছিলেন কমরেড দ্বিজেন সোম। তিনি ছিলেন অকৃতদার এবং সকলের কাছে দেলোয়ার ভাই হিসেবে অধিক পরিচিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট তীব্রতর হয়ে মহামন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো পুঁজি ও শক্তি অনুপাতে বাজার ও প্রভাব বলয় বণ্টন-পুনর্বন্টন ও সর্বোচ্চ মুনাফার লক্ষ্যে দেশে দেশে একচেটিয়া লগ্নি পুঁজির বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এ প্রেক্ষিতে চলছে বাণিজ্যযুদ্ধ, মুদ্রাযুদ্ধ, স্থানীয়যুদ্ধ এবং বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি। দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান আঞ্চলিক শক্তি নয়া উপনিবেশিক ভারতকে কেন্দ্র করে এতদাঞ্চলে আন্ত:সাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব সুতীব্র। আন্ত:সাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে এতদাঞ্চলকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক করিডোর, টিকফা, সোফা, টিপিপি, টিটিআইপি, জাপানের বে-অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) ইত্যাদি চুক্তি করে অগ্রসর হচ্ছে। অন্যদিকে চীন-রাশিয়া সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও), বিআরআইসিএস, আরআইসি, বিসিআইএম করিডোর ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলায় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।

বাংলাদেশ একটি নয়া উপনিবেশিক দেশ হওয়ায় শুরু থেকে অদ্যাবধি প্রতিটি সরকারই অনেক জাতীয় স্বার্থ বিরোধী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে যা সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। ক্ষমতায় আসা বা টিকে থাকার জন্য আমাদের দেশের সরকারগুলো সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে চলে। রামপুর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন চুক্তি সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থেই করা হচ্ছে। তাই আজ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দেশপ্রেমিক শক্তিকে জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী সকল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এবং বাংলাদেশকে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের সকল অপতৎপরতা রুখে দাঁড়াতে হবে। অগ্রসর করতে হবে সকল সাম্রাজ্যবাদ ও দালালদের সৃষ্ট রাষ্ট্রীয় ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। প্রতিষ্ঠা করতে হবে সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ আমলা দালাল পুঁজিবিরোধী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা এবং এর মধ্য দিয়েই কমরেড দ্বিজেন সোম এর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত