স্পোর্টস ডেস্ক

০২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৯:৩৭

ঢাকাকে হারাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ম্যাচে জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তারা জিতেছে ১০ রানের ব্যবধানে।

২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪১ রান করেছিল কুমিল্লা। ঢাকা আটকে যায় যায় ৬ উইকেটে ১৩১ রানে।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। অভিজ্ঞ নুয়ান কুলাসেকেরার বোলিংয়ে আবুল হাসান ও ফরহাদ রেজা নিতে পারেন মাত্র ৬ রান!

ষষ্ঠ ম্যাচে কুমিল্লার এটি চতুর্থ জয়। সমান ম্যাচে ঢাকার জয়-হার তিনটি করে।

বিপিএলে প্রথমবার নতুন বল হাতে নিয়ে ২ ওভারে ২০ রান দিয়েছিলেন আবু হায়দার রনি। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নিয়ে ঘুরিয়ে দিয়েছেন ম্যাচের মোড়।

মাশরাফি ফিট ছিলেন না; একটু পরপরই খোড়াচ্ছিলেন। নাসির হোসেনের ক্যাচ নেওয়ার পর টান লাগল হ্যামস্ট্রিংয়ে। বোলিং করছিলেন স্রেফ কয়েক পা দৌড়ে। খানিকক্ষণ মাঠের বাইরেও ছিলেন। আবার ফিরে বোলিং করেছেন। এত প্রতিকূলতার মাঝেও ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন রায়ান টেন ডেসকাটের মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট।

ব্যাটিংয়ে ঢাকার বড় সর্বনাশ হয়েছে রান আউটে। ওপেনার সৈকত আলি ৮ রানে ফিরেছেন রান আউটে। তিনে নেমে দারুণ শুরু করেছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা। কিন্তু ঢাকা অধিনায়কও কাটা পড়েছেন রান আউটে, যেটায় লঙ্কান কিংবদন্তির নিজের দায়টাই বেশি। সহজেই রান হবে ভেবে আলসে ভঙ্গিতেই ছুটছিলেন সাঙ্গাকারা। কিপিং থেকে ছুটে যাওয়া লিটন দাসের দুর্দান্ত সরাসরি থ্রো উড়িয়েছে বেলস।

শুভগতর স্কিড করা বলে বাজে এক শটে সাদমান ইসলাম (১০) বোল্ড হয়েছেন আগেই। দলের ভরসা হয়ে তখনও উইকেটে ছিলেন নাসির। বেশ আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন, ম্যাচ জেতানোর ক্ষেত্র ছিল প্রস্তুত। কিন্তু দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে আবারও ব্যর্থ ঢাকার এই আইকন ক্রিকেটার। দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা আবু হায়দারকে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন, মিড অফ থেকে কাভারের দিকে অনেকটা দৌড়ে দারুণ ক্যাচ নিয়ে নাসিরকে (৩০ বলে ৩২) ফেরান মাশরাফি।

মাশরাফি এরপর সরিয়েছেন কুমিল্লার সামনে পরের বড় বাধাটিও। স্লোয়ারে আউট করেছেন রায়ান টেন ডেসকাটেকে (১১)। ম্যালকম ওয়ালার (১১), আবুল হাসানরা (১২*) এরপর মেটাতে পারেননি সময়ের দাবি। দুটি উইকেট নিয়ে বিপিএলে উইকেট শিকারে আবার সাকিবকে ছুঁয়েছেন আবু হায়দার (১২টি)।

কুমিল্লার বোলারদের লড়াই করার মঞ্চটা তৈরি করে দিয়েছিলেন আশার জাইদি ও শুভাগত হোম। ইনিংসের বেশিরভাগ সময় জুড়ে ধুঁকতে থাকা কুমিল্লার ইনিংস গতি পায় দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে।

কুমিল্লার আগের ম্যাচও শেষ দিকে ঝড় তুলেছিলেন জাইদি। ৩৬ বলে করেছিলেন অপরাজিত ৫৩। বুধবার দলের ব্যাটিং বিপর্যয় আবারও দাবি করছিল তেমন একটা ইনিংস। ইংল্যান্ডে থিতু হওয়া পাকিস্তানি অলরাউন্ডার দাবি মিটিয়েছনও দারুণভাবে। ২৯ বলে ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৪৫ রানে!

শেষের এই ঝড়ে জাইদির সঙ্গী শুভাগত। ঢাকার সেরা বোলার ইয়াসির শাহকে দুটি চার মেরে ঝড়ের সূচনা শুভাগত হাত ধরেই। ১১ বলে করেছেন তিনি ২১ রান।

শেষ দুই ওভারে কুমিল্লা তুলেছে ৩৫ রান। আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা পাওয়ার সুখবর নিয়ে মাঠে নামা মুস্তাফিজের এক ওভার থেকে এসেছে ১৯ রান। ফরহাদ রেজার করা শেষ ওভার শেষে ১৬।

ইনিংসের আগের পুরোটা সময় কুমিল্লা এগিয়েছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। উদ্বোধনী জুটিতে শেহজাদ ও লিটন দাসের নাম যতটা রোমাঞ্চ জাগায়, পারফরম্যান্সে পড়েনি সেটির প্রতিফলন। বিপিএলে অনেক সৃখস্মৃতি আছে শেহজাদের। টুর্নামেন্টের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডসহ (৪০ বলে) খেলেছেন দারুণ সব ইনিংস। কিন্তু এবার প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ, ফরহাদ রেজার আউট সুইঙ্গারে ফিরেছেন ৯ রানে।

ওপেনিং থেকে তিনে নেমে ৭ রানে আউট ইমরুল কায়েস। পাকিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শোয়েব মালিক আউট হয়েছেন স্বদেশি লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহকে ছক্কা মারতে গিয়ে (১৩ বলে ৮)। ব্যাটিং অর্ডারে পাঁচে উঠে এসে মাশরাফি বোল্ড হয়েছেন ইয়াসিরকে প্যাডল সুইপ খেলতে গিয়ে।
১৩ ওভার উইকেটে থেকেও ঠিক ছন্দ পাননি লিটন। শেষ পর্যন্ত মোশাররফ হোসেনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন সীমানায় (৩৪ বলে ৩১)।

কুমিল্লার ১০০ ছোঁয়া নিয়েই শঙ্কা। কিন্তু দিশাহীন থমকে যাওয়া দলের ইনিংস গতি পায় জাইদি ও শুভাগর ব্যাটিংয়ে। শেষ বলে ছক্কায় দলের রান ১৪০ ছাড়িয়ে নেন জাইদি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত