সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৯:৫৬

আনন্দের বন্যা বইছে অধিনায়ক কৃষ্ণার গ্রামে

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ-সি এর বাছাই পর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী সরকারের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামে। দেশের মুখ উজ্জ্বল করে ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরায় কৃষ্ণার গ্রামে বইছে আনন্দের বন্যা। যদিও কৃষ্ণাসহ দলের খেলোয়াড়দের বাড়ি ফিরতে হয়েছে লোকাল বাসে চেপে তবু কর্তাদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই কৃষ্ণার।

দেশের মুখ উজ্জ্বল করা কৃষ্ণা ছাড়াও অনূর্ধ্ব-১৬ দলের বেশ কয়েকজনের বাসস্থানও টাঙ্গাইলে। পরিবার অসচ্ছল হওয়ায় ঠিকমত লেখাপড়ার খরচও চালাতে পারেনি কৃষ্ণার বাবা। তবে তার ভাগ্য খুলে যায় বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। মঙ্গলবার বিকেলে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের কৃতি এই মহিলা ফুটবলারকে সংবর্ধনা দিয়েছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

এ সময় কৃষ্ণা বলেন, ‘এখন আমার একটাই লক্ষ্য, নারী ফুটবলে বাংলাদেশকে আরো উচ্চতায় পৌঁছে দেয়া।’ দরিদ্র পরিবারের মেয়ে কৃষ্ণাকে নিয়ে এখন আনন্দের সীমা নেই সহপাঠী ও শিক্ষকদের মধ্যেও। মেয়ের এমন সাফল্যে খুশি তার মা। গ্রামবাসীও চায় কৃষ্ণা দেশের জন্য আরো বিরল সফলতা বইয়ে আনুক।

কৃষ্ণার মা নমিতা রানী সরকার বলেন, গ্রামের মানুষ আগে কৃষ্ণা ফুটবল খেলতো বলে নানান আজেবাজে কথা বলতো। আমারও খারাপ লাগতো, ছেলেদের খেলা কেন আমার মেয়ে খেলবে। এজন্য আমি ওর ফুটবল বটি দিয়ে কেটে ফেলেছিলাম। তারপরেও আমার মেয়ে দমে যায়নি। কিন্তু এখন ওর সাফল্যে আমি অনেক খুশি।

এমন সাফল্যে সুতি ভিএম বিদ্যালয়েও আনন্দের সীমা নেই। এই স্কুলের মাঠেই প্রশিক্ষণ পেয়ে কৃষ্ণা ও তার কয়েকজন সহপাঠী আজ দেশের হয়ে লড়াই করে সফলতা ছিনিয়ে এনেছে। অধিনায়ক কৃষ্ণা ছাড়াও স্কুলের আরো পাঁচজন ছাত্রী বয়স ভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের প্রথম কোচ ও ক্রীড়া শিক্ষক।

অধিনায়ক কৃষ্ণা, জ্যোৎস্না ও রুমা’র এ সাফল্যের পেছনের কথাও জানান স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক গোলাম রায়হান বাপন। তিনি বলেন, আমার ছাত্রী কৃষ্ণাসহ অন্যান্যদের সফলতায় আমি গর্বিত। আমি চাই তারা এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখুক।’

এই সাফল্য শুধু টাঙ্গাইলের গোপালপুর নয়, সারাদেশই গর্ববোধ করছে উল্লেখ করে গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস আলী তালুকদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়েদের খেলাধুলার জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। তারই ফল আজ বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের এই সাফল্য।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমুর রহমান বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে প্রতিবছর স্কুলগুলোতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট সফলতার সাথে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ কারণে কৃষ্ণাসহ অন্যান্য প্রতিভাময়ী মহিলা ফুটবল খেলোয়াড় বের হয়ে আসছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত