ক্রীড়া প্রতিবেদক

১০ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১২:৪৬

বড় সংগ্রহের পথে ভারত

ভারতের মাটিতে একমাত্র টেস্ট খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে অধিনায়ক ভিরাট কোহলির ব্যাটে ভর করে রানের পাহাড় গড়তে যাচ্ছে ভারত।

আগের দিন ভিরাট কোহলির অপরাজিত ১১১ রান নিয়ে খেলতে নেমে দ্বিতীয় দিনে ১৯১ রান করেছেন তিনি। তবে আগের দিনে আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান অজিঙ্কে রাহানে তাইজুল ইসলামের খানিকটা টার্ন ও বাউন্স থাকা বলে শর্ট কাভারে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচে পরিণত হন। তিনি করেন ৮২ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ২২২ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। ঋদ্ধিমান সাহা ৪ রানে ক্রিজে রয়েছেন। মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৭৭ করেছে ভারত।

তবে ব্যাট হাতে আগের দিনের মতো অপ্রতিরোধ্য গতিতে আছেন ভিরাট কোহলি। তার বিরুদ্ধে অসহায়ের মতো শুধু বল করে যাচ্ছেন তাসকিন, তাইজুল, সাকিবরা কিন্তু উইকেট তুলে নেয়া যাচ্ছে না। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় অধিনায়ক। তিনি ব্যাট করছেন ১৯১ রানে। ঋদ্ধিমান সাহা ৪ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।

প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও দৃষ্টিকটু ফিল্ডিং দেখা গেছে বাংলাদেশের। ব্যক্তিগত চার রানের সময়ই অবশ্য ফিরতে পারতেন ঋদ্ধিমান। কিন্তু তাইজুলের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের সহজতম সুযোগটা হাতছাড়া করেন উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো অধিনায়ক মুশফিক। তাইজুলের বল এগিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেন নি। বল চলে যায় মুশির গ্লাভসে। প্রথম প্রচেষ্টায় বেলস ফেলতে ব্যর্থ। পরে ফেললেও আর লাভ হয়নি, জায়গায় চলে আসেন ঋদ্ধিমান।

শুক্রবার সকালে উইকেটে নামেন দুই নট আউট ব্যাটসম্যান কোহলি ১১১ ও আজিঙ্কে রাহানে ৪৫ রানে। সকালেই ব্যক্তিগত ৬২ রানের সময় জীবন পান রাহানে। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে পয়েন্টে ক্যাচ ভেসেছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও সাব্বির সেটা হাতে জমাতে পারেন নি।

এর আগে প্রথমদিনের শুরুটা দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ বলেই পেয়েছেন উইকেট। তবে এরপর বাকি সময়গুলো ছিল শুধুই ভারতের। বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। তাসকিনের অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে করা বলকে ড্রাইভ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন লোকেশ রাহুল। ব্যাটের কানায় পর আবার পায়ে লেগে স্ট্যাম্প ভাঙ্গে। ফলে ভারত শিবিরে প্রথম আঘাত হানে বাংলাদেশ।

রাহুলের বিদায়ের পর চেতশ্বর পুজারাকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গিরে তোলেন মুরালি বিজয়। দ্বিতীয় উইকেটে এ জুটি ১৭৮ রান সংগ্রহ করে। ভয়ঙ্কর হওয়া এ জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫১তম ওভারের পঞ্চম বলটি পুজারার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে পেছনে গেলে তা প্রথম দফায় ধরতে পারেননি উইকেটরক্ষক মুশফিক। তবে তার প্যাডে লেগে বল লাফিয়ে উঠলে তা তালুবন্দি করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন পুজারা। ১৭৭ বলে ৯টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি।

পুজারার আউটের পর উইকেটে নামেন বর্তমান সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান ও ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বিজয়ের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক। দলীয় ২৩৪ রানে মুরালি বিজয়কে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। লেগ স্ট্যাম্পে থাকা বল সুইপ করতে গিয়ে মিস করলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। তব এর আগেই তুলে নেন নবম সেঞ্চুরি। ১৬০ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১০৮ রান করেন এ ওপেনার।

এদিকে এক মৌসুমে সর্বাধিক টেস্ট রানের রেকর্ডটি এখন ভারতের অধিনায়ক ভিরাট কোহলির।

শুক্রবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১১ রানে দিন শুরু করেন কোহলি। নামের পাশে ৩১ রান যোগ করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন বিশ্বের অন্যতম সেরা এ ব্যাটসম্যান। শীর্ষে উঠতে কোহলি পিছনে ফেলেছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বীরেন্দ্র শেবাগকে।

২০০৪-০৫ মৌসুমে ৯ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি, ৩ হাফ-সেঞ্চুরিতে ১১০৭ রান করেছিলেন শেবাগ। গতকাল ভিরাট কোহলি ছাড়িয়ে যান সুনীল গাভাস্কার ও গ্রাহাম গুচকে। গ্রাহাম গুচ ১৯৯০ সালে ৬ ম্যাচে ৯৬.১৮ গড়ে ১০৫৮ রান করেছিলেন। সুনীল গাভাস্কার ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ৫১.৩৫ গড়ে ১৩ ম্যাচে রান করেছিলেন ১০২৭।

৪ সেঞ্চুরি ও ২ হাফ-সেঞ্চুরিতে ভিরাট কোহলির বর্তমান রান ১১২৭। এ মৌসুমে ৯৩.৯১ গড়ে রান করেছেন রান মেশিন কোহলি। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোথায় গিয়ে থামেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বিজয়ের বিদায়ের পর আজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে দলের হাল ধরেন কোহলি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১২২* রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। দিন শেষে ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন ভারতীয় অধিনায়ক। ১৪১ বল মোকাবেলা করে নিজের ইনিংসটি সাজান ১২টি চারের সাহায্যে। আর ৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন রাহানে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত