স্পোর্টস ডেস্ক

০৫ জুন, ২০১৭ ০১:৫৫

ভারতের কাছে বিধ্বস্ত পাকিস্তান

এজবাস্টনে মাঠে নেমেছিল দুই চিরশত্রু দল ভারত ও পাকিস্তান। তবে জমে ওঠেনি দুই প্রতিবেশী দেশের লড়াই। ভারতীয় বোলারদের তোপে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পরে পাকিস্তানের ইনিংস। শুধু বোলারদের দাপট নয়, দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ ব্যাটসম্যানরাও। উইকেট হারানোর মিছিলে নামে দলটি। ফলে বিশাল ব্যবধানে হেরেছে তারা। বৃষ্টি আইনে পাকিস্তানের হার ১২৪ রানের।

বৃষ্টি আইনে ৩২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নামে পাকিস্তান। তবে ৪.৫ ওভার পরেই নামে বৃষ্টি। প্রায় ঘণ্টা খানেক বন্ধ থাকে খেলা। ফলে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ২৮৯ রান। বৃষ্টির পর শুরুটা ভালোই করে পাকিস্তান। ৪৭ রানের ওপেনিং জুটি পেয়েছিলেন তারা। তবে এরপরই ভারতীয় পেসারদের তোপে পরে দলটি। ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। গড়ে ওঠেনি কোন জুটি।

এক প্রান্তে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন সদ্য সাবেক হওয়া অধিনায়ক আজহার আলি। তবে হাফসেঞ্চুরির পর দলকে বড় বিপদে ফেলে ফিরে যান তিনিও। এরপর দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মোহাম্মদ হাফিজও হতাশ করেন। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ফিরে যান তিনি। ১৫ রান করে করেন শোয়াব মালিক ও সরফরাজ। ইমাদ ওয়াসিম রানের খাতাই খুলতে পারেননি। দলের বিশেষজ্ঞ ৭ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরে দলটি। লেজের ব্যাটসম্যানরাও পারেননি কিছু করতে। ফলে ১৬৪ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ইনিজুরির কারণে ব্যাটিং করেননি ওয়াহাব রিয়াজ।

শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করে মাত্র ৩০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট তুলে নেন উমেশ যাদব। ২টি করে উইকেট শিকার করেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজা। ১টি উইকেট পান ভুবেনেশ্বর কুমার।

এর আগে দুই চিরশত্রুর লড়াইয়ে ভারতের রান খুব বড় হবে না মনে হচ্ছিল। দুই দফা বৃষ্টি সামলে অবশ্য শেষের ঝড়ে ৪ ফিফটিতে বড় রানই পেয়েছে ভারত। শেষদিকে যুবরাজ সিং ও বিরাট কোহলি আগ্রাসী ব্যাটিং দেখালেন। একেবারে শেষটায় ঝড় তুললেন হার্দিক পান্ডিয়ায়ও। ওপেনার রোহিত শর্মা ১১৯ বলে ৯১ রান করেছেন। অন্য ওপেনার শিখর ধাওয়ান দিয়েছেন ৬৫ বলে ৬৮ রান। অধিনায়ক কোহলি ৬৮ বলে ৮১ রানে অপরাজিত থেকেছেন। যুবরাজ মাত্র ৩২ বলের ঝড়ে ৫৩ রান করেছেন। আর ৩ ছক্কায় ৬ বলে ২০ রানের অপরাজিত হার্দিক।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ধীর গতিতেই শুরু করে ভারত। ৫ ওভারে মোটে ১৫ রান আসে। বাউন্ডারি সেখানে ২টি মাত্র। বৃষ্টি নামার আগে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে রান মাত্র ৪৬। রোহিত-শিখরের মতো আগ্রাসী ওপেনিং জুটির কাছে এটা ছিল নগন্য। বৃষ্টির পরও ভারত যে খুব চালিয়ে খেলেছে তা নয়। পাকিস্তান উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করে গেছে। আর ভারতের ব্যাটসম্যানরা রুখতে রুখতে সুযোগ বুঝে মেরে গেছেন।

দুই ব্যাটসম্যানেরই ফিফটি হয়। তারা এরপর দারুণ মারতে থাকবেন এমন ভাবনা যখন তখন তরুণ শাদাবের বলে শিখর ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ১৩৬ রানের প্রথম জুটিতে তার অবদান ৬৫ বলে ৬৮। যেখানে ছক্কা একটি। বাউন্ডারি ৬টি। কোহলি আসেন এরপর। ৩৩.১ ওভারের সময় বৃষ্টি নামে আবার। ১ উইকেটে ১৭৩ রান তখন ভারতের।

ভাগ্য মন্দ রোহিতের। বৃষ্টি থামার পর ৯১ রানে নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। বল একটু বেশি খেলেছেন দুই ডাবল সেঞ্চুরির মালিক। রোহিতের আউটে কিছুটা হলেও শাপেবর হয় ভারতের। নেমেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন যুবরাজ সিং। তার সাথে ওভার প্রতি প্রায় দশ গড়ে ৯৩ রান করেন কোহলি। যুবরাজ ৫৩ রান করে হাসান আলির শিকার হয়ে ফেরেন। কোহলি তারপর মারতে শুরু করেন। ৬টি চারের পাশাপাশি ৩টি বিশাল ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।

ইনিংসের শেষ ওভার দারুণ জমিয়ে দিয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে টানা তিন ছক্কা। তখন আলোচিত হচ্ছিল ছয় বলে ছয় ছক্কার রেকর্ড নিয়ে। তবে চতুর্থ বলে ডট দিয়ে সে আলোচনায় পানি ঢালেন ইমাদ ওয়াসিম। তবে ওই ওভারে আসে ২৩ রান। শেষ চার ওভারে ৭২ রান তুলে ভারত পৌঁছে যায় ৩১৯ রানে। ছোটোখাটো পাহাড়ই বলা যায় যাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত