স্পোর্টস ডেস্ক

১৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ২২:৫৪

রোনালদিনহোর অবসর

প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ থেকে দীর্ঘ বিরতির পর অবসরে গেলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার রোনালদিনহো। ২০১৫ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেনসের হয়ে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন। সেটাই যে শেষ। আর দেখা যাবে না জাদুকরী ফুটবল। সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ব্রাজিলের হয়ে ২০০২ বিশ্বকাপ জয়ী তারকা রোনালদিনহো।

৩৭ বছর বয়সী পিএসজি এবং বার্সেলোনার সাবেক এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের অবসরের সংবাদটি নিশ্চিত করেন তার ভাই এবং এজেন্ট রবার্তো অ্যাসিস, 'সে থেমে গেছে। এখানেই শেষ। চলুন, রাশিয়া বিশ্বকাপের পর আগস্টে আমরা তার জন্য সত্যিকার অর্থেই মনে রাখার মতো বড় কিছু আয়োজন করি। আমরা ব্রাজিল, ইউরোপ এবং এশিয়ায় এই আয়োজনগুলো করতে চাই। অবশ্যই আমরা ব্রাজিল দলের সঙ্গে কিছু করব।'

বড় ধরনের সংবর্ধনা পাওয়ার দাবিদার রোনালদিনহোর। খুব কম সংখ্যক ফুটবলারই আছেন যে কি-না চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, বিশ্বকাপ এবং কোপা লিবার্তোদোরেসের শিরোপা জিতেছিল। তাদেরই একজন রোনালদিনহো। গ্রহের দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আগে পুরো ফুটবল দুনিয়া বুঁদ হয়েছিল রোনালদিনহোর জাদুকরী পারফরম্যান্সে। ২০০২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রি কিকে করা তার গোলটি এখনও ভক্তদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। ওই আসরে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম তারকা ছিলেন তিনি। সেলেকাওদের হয়ে ৯৭ ম্যাচে ৩৩ গোল করেছিলেন রোনালদিনহো।

১৯৯৮ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গ্রেমিওর হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা রোনালদিনহো ২০০১ সালে যোগ দিয়েছিলেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে। ফরাসি ক্লাবটির হয়ে তার শৈল্পিক ফুটবল দেখে চোখ পড়ে বার্সেলোনার। ২০০৩ সালে কাতালান ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছিলেন। ফুটবল ক্যারিয়ারে সেরা সময়টা কাটিয়েছিলেন বার্সার হয়ে। ২০০৫ সালে জিতেছিলেন ব্যালন ডি’অর। আর ২০০৬ সালে বার্সেলোনাকে ১৪ বছরের অপেক্ষা গুছিয়ে জেতান চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। ন্যু ক্যাম্পে পাঁচ বছরে একটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ছাড়াও দুটি লা লীগার শিরোপা জিতেছিলেন রোনালদিনহো। বার্সেলোনায় তিনি ছিলেন মেসির বন্ধু ও পথপ্রদর্শক। আর্জেন্টাইন সুপারস্টার অনেকবারই বলেছিলেন, তার গড়ে ওঠার পেছনে রোনালদিনহোর অবদান ছিল অনেক। কাতালান ক্লাবটির হয়ে ১৪৫ ম্যাচে গোল করেছিলেন ৭০টি।

যত দ্রুত তারকাখ্যাতি পেয়েছিলেন, নিচে নামতেও বেশি সময় লাগেনি ব্রাজিলিয়ান এ তারকার।

মাঠের বাইরের বিশৃঙ্খল জীবনের কারণে অনেকবারই বিতর্কিত হয়েছিলেন রোনালদিনহোর। যে কারণে ২০১০ ব্রাজিল বিশ্বকাপের দলে সুযোগ হয়নি তার। জাতীয় দলে উপেক্ষিত হলেও ক্লাব ফুটবলে সাফল্যের রঙে ভেসেছেন। ২০১০-১১ মৌসুমে এসি মিলানের হয়ে লীগ শিরোপা জিতে বার্তা দিয়েছিলেন ফুটবলকে আরও অনেক কিছু দেওয়ার বাকি আছে তার।

কিন্তু নাইট ক্লাবের বিশৃঙ্খল জীবন থেকে ফিরতে না পারায় ক্যারিয়ারটা বেশিদূর গড়ায়নি। ২০১১ সালে ফ্যামেঙ্গোতে ফেরেন রোনালদিনহো। এরপর অ্যাথলেটিকো মিনেইরো, মেক্সিকোর কেরেতারা এবং সর্বশেষ খেলেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেনসে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত