স্পোর্টস ডেস্ক

২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ২০:০৯

ছোট সংগ্রহের পরও বড় জয় বাংলাদেশের

ত্রিদেশীয় সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ছোট সংগ্রহের পরও বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ২১৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে ৩৬ ওভার ৩ বলে ১২৫ রানে সবাই অলআউট হয়ে যায়। এতে ৯১ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে সিকান্দার রাজা সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন। এছাড়া গ্রায়েম ক্রেমার ২৩, পিমার মুর ১৪, ক্রেইগ আরভিন ১১ ও কাইল জার্ভিস ১০ রান করেন। এই পাঁচ ব্যাটসম্যান ছাড়া জিম্বাবুয়ের আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি।

বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব আল হাসান ৩টি উইকেট নেন। এছাড়া মাশরাফি বিন মুর্তজা, সানজামুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান দুইটি করে এবং রুবেল হোসেন একটি উইকেট নেন।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। তিন ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১২ রান তুলে ফেললেও চতুর্থ ওভারে বোলিং এসে হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে তুলে নিয়ে প্রথম আঘাত হানেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। স্লিপে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে মাসাকাদজা করেন ৫ রান।

ইনিংসের সপ্তম ওভারে বল করতে এসে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। তার করা ওই ওভারের পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে সলোমন মিরে ও ব্রেন্ডন টেইলরকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান বাঁহাতি এই স্পিনার। এদের মধ্যে ৭ রান করা সলোমন মিরে ফেরেন সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে। আর এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরার আগে কোনো রানই করতে পারেননি টেইলর।

দশম ওভারে বোলিংয়ে এসে আবারও আঘাত হানেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। এবার তার শিকার ক্রেইগ আরভিন। মাসাকাদজার মতো অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরা আরভিন করেন ১১ রান।

আরভিনের বিদায়ের পর পিটার মুরকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলীয় সংগ্রহে ৩৪ রান যোগ করেন সিকান্দার রাজা। ২৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে পিটার মুরকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন তরুণ স্পিনার সানজামুল। মুর করেন ১৪ রান।

মুর সাজঘরে ফেরার পর ব্যাট করতে নামেন ম্যালকম ওয়ালার। তবে সানজামুলের পরের বলেই এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে জিম্বাবুয়ের ষষ্ঠ উইকেটের পতন হয়। তাদের দলীয় সংগ্রহ তখন ৬৮ রান।

ওয়ালারের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার। তাকে নিয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে ২৭ রানের আরেকটি জুটি গড়েন সিকান্দার রাজা।

ইনিংসের ৩০তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ক্রেমারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে জুটি ভাঙেন পেসার রুবেল। এর মধ্য দিয়ে দলীয় ৯৫ রানে জিম্বাবুয়ের সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে।

ক্রেমারের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামেন কাইল জার্ভিস। তাকে নিয়েও প্রতিরোধের লড়াই চালানোর চেষ্টা করেন সিকান্দার রাজা। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তার সেই প্রচেষ্টা।

ইনিংসের ৩৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে সিকান্দার রাজার প্রতিরোধ ভাঙেন মোস্তাফিজ। সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে রাজা করেন ৩৯ রান।

৩৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসে আবারও আঘাত হানেন সাকিব। এবার তার শিকার টেন্ডাই চাতারা। সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তিনি করেন ৮ রান। চাতারার বিদায়ের মধ্য দিয়ে জিম্বাবুয়ের নবম উইকেটের পতন হয়।

৩৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে কাইল জার্ভিসকে আউট করে জিম্বাবুয়ের ইনিংস গুটিয়ে দেন মোস্তাফিজ। মাহমুদুল্লাহ হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরা জার্ভিস করেন ১০ রান।

মঙ্গলবার বেলা ১২টায় ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২১৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় স্বাগতিকরা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এছাড়া সাকিব আল হাসান করেন ৫১ রান। সানজামুল ১৯, মুশফিক ১৮ ও মোস্তাফিজ ১৮ রান করেন।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে গ্রায়েম ক্রেমার ৪টি, কাইল জার্ভিস ৩টি এবং টেন্ডাই চাতারা ও সিকান্দার রাজা একটি করে উইকেট নেন।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় মাত্র ৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় তারা। তবে দ্বিতীয় উইকেট তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের জোড়া অর্ধশতকে সে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে টাইগাররা। এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর আবারো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে ১৭০ রান তুলতেই আট উইকেট হারিয়ে দুইশ' রানের নিচেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ শিবির।

তবে শেষ দিকে সানজামুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেনের দৃঢ়তায় ২১৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে সক্ষম হয় টাইগাররা।

সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ জেতায় এরই মধ্যে ফাইনাল নিশ্চিত বাংলাদেশের। এই ম্যাচে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনকে বসিয়ে দলে জায়গা দেওয়া হয়েছে স্পিনার সানজামুল ইসলামকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত