০৪ জুন, ২০১৮ ০০:৩৭
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে ৪৫ রানে হারাল আফগানিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৭ করে আফগানিস্তান। আফগানদের দেয়া ১৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২২ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।
আফগানদের দেয়া ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোরের জবাবে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরে যান দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। আফগান বোলার মুজিবের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান তামিম।
তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। লিটন দাশকে সঙ্গে নিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন তিনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জারদানকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আজ ভালোকিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।
তৃতীয় ওভারে মুজিবুর রহমানকেও বাউন্ডারি হাঁকান সাকিব। কিন্তু সেটি আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ নবীর বলে বল বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে উইকেটকিপার শেহজাদের হাতে ধরা দিয়ে বিদায় নেন সাকিব আল হাসান। ১৫ রান করেন তিনি।
দলীয় ২১ রানে তামিম-সাকিবের উইকেট হারিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম।
তৃতীয় উইকেটে তারা সাবলিল ব্যাটিং করে যান। এই জুটিতে তারা ৪৩ রান যোগ করেন। মুশফিক-লিটনের এমন ব্যাটিংয়ের পর জয়ের পাল্লা কিছুটা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে পড়ে। সপ্তম ওভারে দলীয় রান তখন দুই উইকেটে ৬৪।
এসময় বিশেষ করে লিটন দাশ উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিলেন। তার ব্যাট থেকে রানও আসছিল। কিন্তু মোহাম্মদ নবীকে অযথা শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। মাত্র ২০ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩০ রান করেছিলেন লিটন।
প্রথম ১০ ওভারে ৮০ রান করার পর বিদায় নেন বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
বর্তমান বিশ্বে এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত লেগস্পিনার রশিদ খানকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক (২০)। পরের বলেই সাব্বিরও রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন। রশিদ খানের গুগলিতে পরাস্ত হয়ে এলডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন মারমুখী এ ব্যাটসম্যান।
১০.২ ওভারে ৭৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। দলের এমন কঠিন পরিস্থিতে হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
অষ্টম উইকেটে তারা উইকেটে ধরে খেললেও রান রেট তাড়া করে লড়াই চালিয়ে যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এক ওভার বাকি থাকতেই ১২২ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করা আফগানিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬৮ রানের ভালো লক্ষ্য দাঁড় করায়। শুরুতে কোন উইকেট না হারিয়ে তুলে ফেলে ৬২ রান। এরপর উসমান ঘানিকে বোল্ড করেন রুবেল হোসেন। ৮৬ রানের মাথায় ৪০ রান করে সাকিবের বলে ফিরে যান মোহাম্মদ শাহজাদ।
এরপর ঝড়ো ইনিংস শুরু করেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। তিনি মাত্র ১৮ বলে খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস। এরপর ফিরে যান আবু জায়েদের বলে। এছাড়া শফিকুল্লাহ খেলেন ৮ বলে ২৪ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। তাদের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান তোলে আফগানরা।
বাংলাদেশের হয়ে এক ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ১ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মাহমুদুল্লাহ। আবু জায়েদ ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। আবুল হাসান ৩ ওভারে ৪০ রানে ১ উইকেট এবং সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৬৭/৮ (শাহজাদ ৪০, গনি ২৬, স্টানিকজাই ২৫, নাজিবুল্লাহ ২, নবি ০, শেনওয়রি ৩৬, শফিকুল্লাহ ২৪, রশিদ ৬*, করিম ০, মুজিব ০*; আবু জায়েদ ১/৩৪, নাজমুল অপু ০/৩২, রুবেল ১/৩২, সাকিব ১/১৯, আবুল হাসান ২/৪০, মোসাদ্দেক ০/৩, মাহমুদউল্লাহ ২/১)।
বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ১৬৮) ১৯ ওভারে ১২২ (তামিম ০, লিটন ৩০, সাকিব ১৫, মুশফিক ১৭, মাহমুদউল্লাহ ২৯, সাব্বির ০, মোসাদ্দেক ১৪, হাসান ৫, নাজমুল ৪*, রুবেল ০, আবু জায়েদ ১; মুজিব ১/২০, শাপুর ৩/৪০, নবি ২/২১, করিম ১/২৭, রশিদ ৩/১৩)
ফল: আফগানিস্তান ৪৫ রানে জয়ী
আপনার মন্তব্য