গ্রুপ-সি তে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে আজ রাত রাত ৮টায় মাঠে নামবে ফ্রান্স। প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে কোন রকম চাপ ছাড়াই খেলতে নামবে ফরাসিরা। কারণ প্রথম দুই ম্যাচ জিতে তারা নিশ্চিত করেছেন চলতি বিশ্বকাপের শেষ ষোল। তবে দারুণ চাপে থাকবে প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক। কারণ শেষ ষোল নিশ্চিত করতে যেভাবেই হোক তাদের পরাজয় এড়াতে হবে। অন্যথায় সম্ভাবনা আছে পেরুকে হারিয়ে গ্রুপের অপর সদস্য অস্ট্রেলিয়ার শেষ ষোল রাউন্ডে উঠে যাওয়ার।

‘সি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ১-০ ব্যবধানে পেরুর বিপক্ষে জয় পেয়ে তালিকার শীর্ষে থেকেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করে। আজ গ্রুপের শেষ ম্যাচে ডেনমার্ককে মোকাবেলা করবে ফ্রান্স। যারা দু’ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্র পেয়ে তালিকার দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এ ম্যাচে ডেনমার্ককে হারিয়ে জয়ের ধারায় থাকতে চায় ফ্রান্স।

এর আগে বিশ্বকাপে একবারই ফ্রান্স তাদের গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই জয় পেয়েছিল। ১৯৯৮ সালের ওই টুর্নামেন্টে ফ্রান্স শিরোপাও জিতে নেয়। অন্যদিকে শেষ ষোল নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের বিপক্ষে ড্র করলেই চলবে ড্যানিশদের। তারপরও তাদের লক্ষ্য সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানো। ম্যাচে জয় পেয়ে গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবেই নক আউট পর্বে যেতে চায় ডেনমার্ক।

ডেনমার্ক ম্যাচের আগে ফ্রান্সের মিডফিল্ডার কোরেনটিন টোলিসো মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের ভুল থেকে তার শিক্ষা নেয়া উচিত। আর সেটা কাটিয়ে ডেনমার্কের বিপক্ষে আরেকটি সুযোগ তিনি আশা করছেন। প্রথম ম্যাচে ৭৮ মিনিট পর্যন্ত মাঠে থাকলেও পেরুর বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে সেরা একাদশে জায়গা হয়নি টোলিসো’র। তার জায়গায় খেলেন ব্রেইস মাতোদি।

কিন্তু মস্কোতে অনুষ্ঠিত গ্রুপের শেষ ম্যাচে দলে ফিরে আসার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। টলিসো বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের পারফরমেন্স আমি পর্যবেক্ষণ করেছি। ব্রেইস আসার পরে দলে যে পার্থক্য হয়েছে সেটাও আমি ধরতে পেরেছি। তাকে খেলানোর যৌক্তিকতা আছে। যে কারণে পেরুর বিপক্ষে আমি খেলতে পারিনি। কিন্তু এখনো সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আমার বিশ্বকাপে খেলার আশা আছে। আবারো সুযোগ পেলে কোচকে দেখাতে পারবো আমি কি করতে পারি।’

ফ্রান্সের কোচ দেশ্যম যদি আবারো তার মাঝমাঠ নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করেন তবে টোলিসোর ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে কাজানের মত তাকে স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে টোলিসো’র কথা, ‘দলে আর আগেও আমি যেভাবে খেলেছি তেমনই আমাকে খেলার স্বাধীনতা দিতে হবে। বিশ্বকাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। তাই আমি গুরুত্বের সঙ্গে আমার খেলা খেলতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পরে আমি বুঝতে পেরেছি কি করা উচিত, কি উচিত

আজকের ম্যাচে সুযোগের অপেক্ষায় আছেন আরো একজন। তিনি হলেন- ড্যানিশ স্ট্রাইকার কাসপার ডলবার্গ। রাশিয়ায় এখনও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তার। কিন্তু ড্যানিশ সমর্থকদের প্রত্যাশা ফ্রান্সের বিপক্ষে অন্তত তরুণ এই স্ট্রাইকারকে খেলানো হোক। ২০ বছর বয়সী ডলবার্গও রাশিয়ায় এখানো খেলতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে এজন্য তিনি কোচ আজে হারেইদির সমালোচনা করেননি।

ড্যানিশ গণমাধ্যমে ডলবার্গ বলেন, ‘ম্যাচ খেলতে সুযোগ না পেলে অবশ্যই সকলে হতাশ হবে। বিষয়টা এমন নয় যে আন্দ্রেস করনেলিয়াসের থেকে সেরা একাদশে সুযোগ পাওয়াটা আমার প্রাপ্য ছিল। অবশ্যই আমি সুযোগের অপেক্ষায় আছি।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ এক গোল করার পাশাপাশি পেরুর বিপক্ষে একমাত্র গোলে এ্যাসিস্ট করে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন আবারো ডেনমার্কের হয়ে জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় আছেন।

ফ্রান্সের শক্তিশালী মাঝমাঠ এরিকসেনকে কিভাবে প্রতিহত করে সেটাই এখন দেখার ব্যাপার। টটেনহ্যামের এই তারকা নিজ দেশের হয়ে শেষ ২০ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন। এর আগে বিশ্বকাপে দু’বার মুখোমুখি হয় ডেনমার্ক ও ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স ২-১ গোলে জিতলেও ২০০২ সালে ডেনমার্ক জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে।

এর আগে পাঁচটি টুর্নামেন্টের তিনটিতেই জয়ী হয়েছিল ফ্রান্স। ডেনমার্কের বিপক্ষে শেষ সাত ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই জয় পেয়েছে ফ্রান্স। ২০০২ সালের বিশ্বকাপে একমাত্র জয়টি আসে ডেনমার্কের। এই ম্যাচে ডেনমার্ক যদি কোন পেনাল্টি পায় তবে প্রথম দল হিসেবে ১৯৯৮ সালের পরে একটি গ্রুপের সবকটি দল প্রথম পর্বে পেনাল্টি উপহার পাবে।

আজ এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও পেরু। সোচি’তে রাত ৮ টায় শুরু হবে এ ম্যাচটিও। গ্রুপের শেষ এই ম্যাচে যদি অস্ট্রেলিয়া বড় ব্যবধানে জয় পায় আর আরেক ম্যাচে ফ্রান্স যদি ডেনমার্ককে হারিয়ে দেয় তাহলে শেষ ষোলোতে জায়গা পাবে অস্ট্রেলিয়াই। তাই পেরুর বিপক্ষে তারা আটঁ-ঘাঁট বেঁধেই মাঠে নামবে।