সিলেটটুডে স্পোর্টস ডেস্ক

২৪ জুলাই, ২০১৫ ১০:৩২

চতুর্থ দিনের খেলা পরিত্যক্ত : নিষ্প্রাণ ড্রয়ের দিকে এগুচ্ছে চট্টগ্রাম টেস্ট

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার চট্টগ্রাম  টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।  রোমাঞ্চের সম্ভাবনা জাগালেও এ ম্যাচ নিষ্প্রাণ ড্র'য়ের দিকেই এগুচ্ছে। পঞ্চম ও শেষ দিনে বড় ধরণের কোন ঘটন-অঘটন না ঘটলে দু'দলকেই হয়ত ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হতে পারে। 

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের চেয়ে এখনো ১৭ রানে পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই প্রোটিয়া ওপেনার স্টিয়ান ভ্যান জিল ৩৩ ও ডিন এলগার ২৮ রানে অপরাজিত আছেন।

ভোর থেকে চট্টগ্রামে প্রবল বর্ষণের কারণে মাঠে পানি জমে যায়। তাই নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ৯টায় খেলা শুরু করা সম্ভব হয়নি, এমনকি আফটার লাঞ্চ সেশনেও বৃষ্টি না থামায় চতুর্থ দিনের খেলার পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন আম্পায়ারেরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাতে হালকা বৃষ্টি হলেও শুক্রবার (২৪ জুলাই) ভোর থেকে তা প্রবল হয়।

আগের দিন ২১.১ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ৬১ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ছয়জন বোলার ব্যবহার করেও সফলতার মুখ দেখেননি।

এর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আকাশে মেঘ জমে আলো স্বল্পতা দেখা দিলে প্রায় ২৫ ওভারের মতো বাকী থাকতেই বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করার সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়াররা।

প্রথম ইনিংসে দ. আফ্রিকার করা ২৪৮ রানের জবাবে ১১৬.১ ওভার ব্যাট করে ৩২৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এতে করে প্রোটিয়াদের চেয়ে ৭৮ রান এগিয়ে থাকে স্বাগতিকরা। টাইগারদের হয়ে অর্ধশতক হাঁকান তামিম ইকবাল (৫৭), মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ (৬৭) এবং লিটন দাশ (৫০)। ওপেনার ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান।

চট্টগ্রাম টেস্টের মধ্য দিয়ে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। অতিথিদের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো লিড নেওয়া বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর ছিল ২৫৯ রান। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামেই টেস্টে এক ইনিংসে দলীয় এ স্কোর গড়ে টাইগাররা। সে ম্যাচে সফরকারী দল ইনিংস ও ২০৫ রানের জয় পায়।

শুধু ইনিংসে সর্বোচ্চ রানই নয়, প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এবারই প্রথম এক ইনিংসে একশ ওভারের বেশি ওভার ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০০২ সালে ৮৭.৫ ওভার ব্যাটিং ২৫২ রান  তুলতে পেরেছিল টাইগাররা।

তৃতীয় দিন চার উইকেটে ১৭৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। মুশফিক ১২ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ২৮ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। আর টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম অর্ধশতক থেকে তিন রান দূরে থাকতে বিদায় নেন সাকিব আল হাসান। তার আগে লিটন দাশকে সঙ্গে নিয়ে ৮২ রানের জুটি গড়েন সাকিব। এটি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান।

প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করায় লিটনকে ভারতের বিপক্ষে সুযোগ দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। আর সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রথম টেস্টে বেশ ভালোই করেন লিটন। সাদা পোষাকে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে ক্যারিয়ার সেরা রান করে অর্ধশতক হাঁকান তিনি। ১০১ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান দিনাজপুরের এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

প্রোটিয়াদের হয়ে ডেল স্টেইন ও সিমন হারমার তিনটি করে উইকেট লাভ করেন। ভারনন ফিল্যান্ডার দুটি, ভ্যান জিল ও এলগার একটি করে উইকেট নেন।

টেস্টের প্রথম দিন ২৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় দ. আফ্রিকা। মুস্তাফিজুর রহমান, জুবায়ের হোসেন, মোহাম্মদ শহীদদের বোলিং তোপে প্রোটিয়ারা ৮৩.৪ ওভার ব্যাট করতে সক্ষম হয়। প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৪ রান আসে পাঁচ নম্বরে নামা তেমবা বাভুমার ব্যাট থেকে। এছাড়া ওপেনার ডিন এলগার ৪৭, ভ্যান জিল ৩৪ ও ফাফ ডু প্লেসিস ৪৮ রান করেন।

টাইগারদের হয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন কার্টার মাস্টার মুস্তাফিজ। আর তিনটি উইকেট দখল করেন জুবায়ের হোসেন। এছাড়া সাকিব, মাহামুদুল্লাহ ও তাইজুল একটি করে উইকেট নেন। 


স্কোর: দ. আফ্রিকা - ২৪৮ ও ৬১/০
বাংলাদেশ - ৩২৬

আপনার মন্তব্য

আলোচিত