তাহিরপুর প্রতিনিধি

২২ মে, ২০২০ ২২:২০

হাওরে অবাধে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার

টাঙ্গুয়ার হাওর দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট পাখি ও মৎস্য অভয়ারণ্য হিসাবে পরিচিত হলেও বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। বৃষ্টির কারণে টাংগুয়ার হাওরে পানি প্রবেশ করেছে। পানি আসার সাথে সাথে শুরু হয়েছে অবাধে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধন।
 
গত দু দিন ধরে রামসার সাইট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত টাঙ্গুয়ার হাওরের মূল অভয়াশ্রম লেউচ্চামারা, রুপাবই, হাতিরগাতা, তেঘুনিয়া, বেরবেরিয়া ও রৌয়াতে চলছে ডিমওয়ালা মা মাছ নিধন।

জানা যায়, গত কয়েক দিন আম্পানের প্রভাবে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে প্রতি বছরের মত এবার ও হাওরে পানি প্রবেশ করায় সবাই মহাসমারোহে মাছ ধরা শুরু করেছে। একে স্থানীয় ভাষায় উইয্যা বলে। তবে এই সময়টা মাছের প্রজনন কালীন সময়। ফলে এখন ধরা পড়ছে সব ধরনের পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পোনামাছ ও ডিমওয়ালা মাছ নিধন করা যাবে না। এই সময়ে মৎস্য নিধন করলে অর্থদণ্ড ও জেল জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের আইন রয়েছে। কিন্তু এর কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ বাস্থবে দেখা যায় নি।


হাওর পাড়ের বাসিন্দা সাবজল আহমেদ জানান, একটা সময় ছিল জেলে ও কৃষকেরা শখের বসে স্বল্প আকারে পোনা মাছ ধরত। আর এখন পোনা ও ডিমওয়ালা সব ধরনের মাছ নিধনের মহোৎসব চলছে। তাই এই সময় প্রশাসনের পক্ষ কঠোর নজরদারী ও পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধনে মৎস্য আইন প্রয়োগ করলে মাছের বংশবৃদ্ধি করা সহজ হত। আর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে হাওরে পানি ঢুকলে স্রোত তৈরি হলে মাছ ডিম ছাড়বে। কারণ পানির স্রোত না থাকলে এসকল মাছ ডিম ছাড়তে পারে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা টাঙ্গুয়ার হাওর কেন্দ্রীয় সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য অখিল তালুকদার জানান, এমনিতেই হাওরে কমছে দেশীয় মাছের সংখ্যা। আর প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ শতাধিক জেলে টাঙ্গুয়ার হাওরে ডিমওয়ালা মা মাছ ও পোনা মাছ ধরে। আর এভাবে যদি চলতে থাকে তবে হাওরের মাছ বিলুপ্ত হতে বেশি দিন লাগবে না।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সমন্বয়ে হাওরে এখননিই অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সাথে সাথে মাছের বংশ রক্ষায় পোনা ও মা মাছ নিধনে বন্ধে কঠোর নজরধারী রাখতে হবে।

তাহিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন জানান,মৎস্য নিধন বন্ধে প্রয়োজনীয়  পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। কোন অন্যায় কেই ছাড় দেওয়া হবে না।   

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিজেন ব্যানার্জি বলেন, যে জেলেরা সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে দেশের সম্পদ নষ্ট করে মৎস্য নিধন করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত