জুড়ী প্রতিনিধি

৩০ মে, ২০২০ ১৩:২৩

জুড়ী-ফুলতলা রাস্তা দ্রুত সংস্কারের দাবি

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার জুড়ী-ফুলতলা রাগনা বটুলী চেকপোস্টে যাতায়াতের জন্য প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন রাস্তার কাজের ধীর গতি ও ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে শুক্রবার মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন স্থানীয় এলাকাবাসী। যথা সময়ে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিয়ে শত শত মানুষ জড়ো হলে স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত এবং সঠিকভাবে কাজ সংস্কারের আশ্বাসে মানববন্ধন স্থগিত করেন তারা।

স্থানীয় ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীর সাথে একাত্মতা পোষণ করে এই কর্মসূচি স্থগিত করেন।।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জুড়ী-ফুলতলা বটুলী চেকপোস্টের যাতায়াতের ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের পুরোটাই ভেঙেচুরে বেহাল দশায় পরিণত হয়। ২০১৮ সালের ২৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (সিলেট জোন) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সড়ক বিভাগ, মৌলভীবাজার এর বাস্তবায়নে জুড়ী-ফুলতলা (বটুলী) (জেড-২৮২৩) জেলা মহাসড়কটি ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুটে উন্নীতকরণসহ মজবুতিকরণ কাজের জন্য ৬৯ কোটি টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে তা ৭৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। দুই বছরের মধ্যে কাজ সম্পাদনের জন্য ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন নামক ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই রাস্তার কাজ পায়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এর কার্যাদেশ হয়।

কিন্তু প্রায় দেড় বছর অতিক্রম হয়ে গেলেও কাজের কোন উন্নতি দেখা দেয়নি বরং রাস্তার পিচ তুলে নেওয়ার কারণে সম্পূর্ণ রাস্তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রাস্তা দিয়ে ফুলতলা, সাগরনাল ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াত। ভারত-বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্কের চেকপোস্টের অন্যতম মাধ্যম এ রাস্তা। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী গাড়ী চলাচল করে। কাজের ধীরগতির কারণে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে অসুবিধা হয়। তাছাড়া রাস্তা উঁচু করে বালি দেওয়ার কথা থাকলে তা করা হচ্ছে না।

এসব অনিয়ম ও ধীর গতিতে কাজের প্রতিবাদে মানববন্ধন আয়োজন করে এলাকাবাসী। কিন্তু করোনার কারণে জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকায় স্থানীয় প্রশাসন ঠিকাদারের সাথে আলাপ করে এসব দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাসে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মানববন্ধন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। এরই প্রেক্ষিতে স্থানীয় ফুলতলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ উপস্থিত এলাকাবাসীকে প্রশাসনের এ অনুরোধের কথা জানালে তারা মানববন্ধন স্থগিত করেন।

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান বলেন, যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে সে কখনও কাজ দেখতে আসেনি। তার প্রতিনিধি বড়লেখার শিমুল ঠিকাদার তার মনগড়া কাজ করে যাচ্ছে। সে নিম্ন মানের কাজ করে এবং ধীরগতিতে কাজ করে। সে প্রভাবশালী ঠিকাদার হওয়ার কারণে কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শুরু না হলে তিনি নিজে এলাকাবাসীকে নিয়ে আন্দোলনে নামবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম, স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুব আলম রওসন, জামাল উদ্দিন সেলিম, ইমতিয়াজ মারুফ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক তাজুল ইসলাম, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছায়াদ আহমদসহ এলাকার শত শত মানুষ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত