নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ মে, ২০২০ ১৬:৪৬

একনজরে সিলেট বোর্ডের সেরা ১০ স্কুল

সিলেট বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় সিলেট জেলার সাতটি স্কুল স্থান পেয়েছে সেরা দশে। এই তালিকায় মৌলভীবাজারের দুটি ও হবিগঞ্জের একটি স্কুলের নামও রয়েছে। তবে ঠাই হইনি সুনামগঞ্জের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।

রোববার (৩১ মে) সকাল ১০টায় গণভবনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন।

সিলেট বোর্ডের শীর্ষস্থানে সিলেট জেলার ব্লু বার্ড হাই স্কুল এন্ড কলেজ। শতভাগ পাস করা এই প্রতিষ্ঠানে জিপিএ-৫ পেয়েছে সর্বোচ্চ ২১৪ জন।

বিজ্ঞাপন

সিলেট বোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ব্লু বার্ড হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৭৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন সবাই।

বোর্ডে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। ২৬৬ জন শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০৭ জন। শতভাগ পাসের রেকর্ডও করেছে এই স্কুলটি।

তৃতীয় স্থানে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৪৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ২৪৬ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৬ জন।

সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৩৩৬ জন ছাত্রী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩২১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৯ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

বোর্ডের সেরা দশের তালিকার পঞ্চম ও হবিগঞ্জের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। ২৫৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৪৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৫ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ০৩ শতাংশ

মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৩৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৩৫ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৪ জন। জেলার এই স্কুলটি রয়েছে সপ্তম স্থানে।

সিলেট ক্যাডেট কলেজ এবারও অক্ষুণ্ণ রেখেছে শতভাগ পাসের রেকর্ড। ৫৪ জন পরীক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫৪ জন এবং জিপিএ-৫ ও পেয়েছে ৫৪ জনই। বোর্ডের তালিকায় তারা সপ্তম স্থা অধিকার করেছে।

অষ্টম স্থানে থাকা জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাই স্কুল থেকে ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাস। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫০ জন।

শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে নবম স্থানে। ২৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৫৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯ জন ও পাসের হার ৯৮ দশমিক ১০ শতাংশ।

সেরা দশের সর্বশেষ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার দি বাডস রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১১২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭ জন। পাস করেছে ১১০ জন ও পাসের হার ৯৮ দশমিক ২১ শতাংশ।

সিলেট বোর্ডের মধ্যে সিলেট জেলায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা বোর্ডে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে মেয়েদের হার ৮০ দশমিক ৪২ শতাংশ ও ছেলেদের হার ৮১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অপরদিকে মৌলভীবাজার জেলায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ ছেলে ও ৭৯ দশমিক ৬১ শতাংশ মেয়ে।

সুনামগঞ্জ জেলায় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও মেয়ে ৭৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। হবিগঞ্জ জেলায় পাস করেছে ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা সিলেট বোর্ডে সর্বনিম্ন। এদের মধ্যে ছেলে ৭২ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং মেয়ে ৭২ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

সিলেট জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ১৮০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে ১ হাজার ৫৩ জন ও মেয়ে ১ হাজার ১২৭ জন। হবিগঞ্জের ৬০৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এদের মধ্যে ২৯০ জন ছেলে এবং ৩১৫ জন মেয়ে।

মৌলভীবাজারে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৬৫ জন। এর মধ্যে ৫২৭ জন ছেলে এবং ৫৩৮ জন মেয়ে। সুনামগঞ্জ জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ৪১৩ জন। এর মধ্যে ২১১ জন ছেলে এবং ২০২ জন মেয়ে।

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সিলেট বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৯৩২ জন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭০ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬১ জন।

সিলেট বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসিতে ৯১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক লাখ ১৬ হাজার ১০৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। পাস করেছেন ৯১ হাজার ৪৮০ জন। এদের মধ্যে ছেলে ৩৯ হাজার ৫০৪ জন এবং মেয়ে ৫১ হাজার ৯৭৬ জন।

সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন পরীক্ষার্থী। গত বছর ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন।

এবার কেবল ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন। যেসব পরীক্ষার্থী নির্ধারিত নিয়মে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে প্রাকনিবন্ধন করেছে, তাদের মুঠোফোন নম্বরে খুদে বার্তা পাঠিয়ে ফল জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে।

নয়টি সাধারণ বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডের ৭১ দশমিক ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবারও পাসের হারে এগিয়ে আছে ছাত্রীরা। ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ পাস করেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত