শাকিলা ববি

০১ জুন, ২০২০ ০১:১৬

ঈদ শেষেও ‘প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার’ পাননি সিলেটের অনেকে

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর ও শ্রমজীবীদের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। ঈদের আগমুহূর্তে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া এই অর্থ সহায়তাকে 'প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার' বলে আখ্যায়িত করেছিলেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।

এ সহায়তায় জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সিলেট জেলার ১ লাখ ৩০ হাজার পরিবারের তালিকা করা হয়। এই পরিবারগুলো আড়াই হাজার টাকা করে সহায়তা পাওয়ার কথা। কিন্তু ঈদ শেষ হলেও এখনো অর্থ সহায়তা পৌঁছায়নি তালিকায় নাম থাকা সিলেটের অনেক পরিবারের কাছে।

তালিকায় থাকা সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ১০ জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা এখনও অর্থ সহায়তা পাননি।

সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বলছেন, তালিকায় থাকা সবাইকে পর্যায়ক্রমে টাকা পাঠানো হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবাই টাকা পেয়ে যাবেন। তবে ঠিক কতদিনের মধ্যে তারা টাকা পেতে পারেন এব্যাপারে নির্বাহী কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি।

সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন পর্যন্ত কতজন অর্থ সহায়তা পেয়েছেন তার কোনো হিসাব তাদের কাছে নেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টি দেখভাল করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় কারো কোনো অভিযোগও নেই বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

অর্থ সঙ্কটে পড়া মানুষদের সহযোগিতা করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এই নগদ অর্থ সহায়তা মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নগদ, বিকাশ, রকেট ও শিওরক্যাশের মাধ্যমে সরাসরি উপকারভোগী পরিবারের কাছে প্রেরণ করার কথা।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিন্টু চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তার জন্য এই উপজেলা থেকে ৬ হাজার মানুষের তালিকা পাঠানো হয়। এই তালিকা করেছে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত কমিটি। এরমধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকজনের টাকা পাওয়ার খবর শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো আমাদের কাছে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। আমরা যাচাইবাছাই করে তালিকা পাঠিয়েছি। এখন হয়তো মন্ত্রণালয় থেকেও যাচাইবাছাই হচ্ছে। আশা করছি শীঘ্রই সবাই টাকা পেয়ে যাবেন।

সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ বলেন, এই উপজেলা থেকে ৮ হাজার ৫০০ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন টাকা পেয়েছেন। অন্যদের টাকা পেতে কেন দেরি হচ্ছে এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে জানান কাজী মহুয়া মমতাজ।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, অর্থ সহায়তার জন্য এই উপজেলা থেকে ৫ হাজার মানুষের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে কতজন টাকা পেয়েছেন এই তথ্য নেই। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো তালিকা না পাঠালে কিছু বলা যাবে না।

কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য বলেন, এই উপজেলা থেকে ৭ হাজার ৫০০ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে। যাদের তালিকা পাঠানো হয়েছে তাদের মোবাইল নাম্বার যদি তার নিজস্ব এনআইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে তাকে টাকা দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে হয়তো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা অন্যভাবে তাদের কাছে টাকা পৌঁছানো হবে। এই তালিকার কারা টাকা পেয়েছেন কারা পাননি, কেন পাননি তা এখনই বলা যাবে না।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব বলেন, গোয়াইনঘাট উপজেলার ১১ হাজার দরিদ্র মানুষের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই টাকা পেয়েছেন। যারা টাকা পাননি তারাও শীঘ্রই পেয়ে যাবেন।

এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে দেশে পবিত্র ইদুল ফিতর পালিত হয়। এরআগে গত ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সহায়তা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত