০১ জুন, ২০২০ ২০:৫৮
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ নুরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আরিফুল ইসলাম রাকিব জিপিএ -৫ পেয়েছে। সে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মাছ বিক্রেতা মো. কদর হোসেনের ছেলে। মাছ বিক্রি করে কোনরকম তাদের সংসার চলে।
কদর হোসেনের চার ছেলের মধ্যে দুইজন এবার এস এসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। বড় ছেলে রাকিব জিপিএ ৫ পেলেও তার মেঝ ছেলে আমিনুল ইসলাম রাজিব অল্পের জন্য মিস করেছে জিপিএ ৫। সেঝ ছেলে জহিরুল ইসলাম সাজিব স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন এ সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। ছোট ছেলে সাদেকুল ইসলাম মোজাম্মেল ৩য় শ্রেণীতে পড়ে।
রাকিবের বাবা কদর হোসেন বলেন, আমার ছেলে রাকিবের রেজাল্টে খুব খুশি আমি। যা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ছেলেটা গরীব বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমি বিভিন্ন ডোবা, খালে-বিলে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি । কখনও-কখনও কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। আমার বড় ছেলে রাকিব ও সংসার চলানোর জন্যে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে। আমি আমার ছেলেকে ডাক্তার বানাতে চাই। তবে আমার তো আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিভাবে কি করবো বুজে উঠতে পারছি না।
এদিকে ছেলে জিপিএ ৫ পেলেও আনন্দের মাঝেও বারবার পীড়া দিচ্ছে তাকে কিভাবে ছেলেকে কলেজে ভর্তি করবেন। কলেজে ভর্তির টাকা কোথায় পাবেন।
এ বিষয়ে নুরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবেদুর রহমান পাভেল বলেন, কদর হোসেনের ছেলে রাকিব অত্যন্ত মেধাবী ও বুদ্ধিমান। ছোট বয়স থেকেই লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল ইচ্ছা। আর্থিক সংকটে থাকা সত্ত্বেও এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, মফস্বল এর স্কুল থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া এত সহজ কথা নয়। আরিফুল ইসলাম রাকিব খুবই মেধাবী একজন ছাত্র। সে আমাদের স্কুলের গর্ব। সে সঠিক গাইডলাইন পেলে এবং ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারলে সে ভবিষ্যতে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। আরিফুল ইসলাম রাকিব স্বপ্ন পূরণের পথে কেবল মাত্র প্রথম ধাপ পেরিয়েছে। সফলতার সহিত পাড়ি দিতে হবে আরও অনেক পথ। সকল বাধা পেরিয়ে রাকিবের উচ্চ শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়ার জন্য দরকার সকলের দোয়া ও সহযোগিতা। না হলে অকালেই ঝড়ে পড়বে রাকিবদের মত মেধাবীরা।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, নিজের ইচ্ছা শক্তি আর পরিশ্রম করলে ভালো রেজাল্ট করা যায় রাকিব তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় বাবার সাথে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেও রাকিব জিপিএ ৫ পেয়েছে। ভবিষ্যতে রাকিবের পড়াশোনার জন্য আমি তার পাশে থাকবো।
আপনার মন্তব্য