জাহিদুল ইসলাম

১০ জুন, ২০২০ ০০:৫৩

সিলেটে করোনা পরীক্ষার ফল পেতে বিলম্ব, রোগীদের ভোগান্তি

সিলেটের গণমাধ্যমকর্মী শুয়াইব হাসান স্ত্রীর করোনা উপসর্গ দেখে নানা ভোগান্তির পর পরীক্ষা করান। সপ্তাহখানেক পর পরীক্ষার ফল এলে জানতে পারেন স্ত্রীর কোভিড-১৯ পজিটিভ। ততদিনে বাসায় বৃদ্ধ মা আর নিজের মধ্যেও করোনার উপসর্গ দেখতে পান তিনি। তাই মাকে নিয়ে নিজেও যান নমুনা পরীক্ষার জন্য। তিনদিন ঘুরে মায়ের পরীক্ষা করাতেই পারেন নি। নিজের নমুনা প্রদান করেও গত সাতদিন ধরে রিপোর্ট পান নি। এমন অবস্থায় ঘরে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছেন উপসর্গের। একইভাবে নমুনা প্রদান করে সপ্তাহখানেক সময় ধরে অপেক্ষা করছেন সিলেটের আরও ৬ গণমাধ্যমকর্মী।

গত দুই সপ্তাহ ধরে সিলেটে দ্রুত গতিতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই ৫০ এর উপরে করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শনাক্তের সংখ্যার চেয়ে অধিক রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

সিলেটে গত ৫ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ৯৮৯ জন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮ জন। সিলেটের দুটি পিসিআর ল্যাবে দৈনিক প্রায় ৪০০ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে এতেও কুলোচ্ছে না এখন। অতিরিক্ত নমুনা ঢাকায় প্রেরণ করে ফল জানতে সময় লাগছে ৭ থেকে ৮ দিন। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপসর্গ থাকা রোগীদের। একদিকে যেমন অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে উপসর্গ থাকা রোগীদের, অপরদিকে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় কোনো প্রকার নিয়মনীতি না মেনেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। এর ফলে সংক্রমণ ঝুঁকিতে রয়েছেন সিলেটের জনসাধারণ।

গণমাধ্যমকর্মী শুয়াইব হাসান বলেন, রিপোর্ট না পেলেও আমরা হয়তো বাড়িতে বসেই উপসর্গের চিকিৎসা নিচ্ছি, কিন্তু সাধারণ মানুষতো এতো সচেতন নয়। তারা নমুনা পরীক্ষার ফল আসার আগে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সবার মাঝে। এতে নিজের পাশাপাশি অন্যদেরও ঝুঁকিতে ফেলছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলায় পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদান করে গত ২ জুন থেকে অপেক্ষারত রোগীর সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি। বিভাগজুড়ে যার সংখ্যাটা বিশাল। দুটি ল্যাবে জমা পড়া এসব অতিরিক্ত নমুনার ফল জানতে পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। আর তাই ফল পেতে বিলম্ব হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, গত দুই তারিখ থেকে নমুনা পরীক্ষার চাপ বেড়েছে। এ কারণে সিলেট বিভাগের বেশ কিছু নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো তার রিপোর্ট পাওয়া যায় নি। তিনি আরও বলেন, নমুনা সংগ্রহের চাপ কমাতে উপসর্গবিহীন কাউকে পরীক্ষা না করতে নির্দেশনা রয়েছে।

বাড়তি ল্যাবের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দুটি ল্যাবে মোট চারশর কাছাকাছি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে নমুনা জমা পড়ছে হাজারের উপরে। এর ফলে আমরা সঠিক সময়ে ফল জানাতে পারছি না। তবে পরীক্ষার ল্যাব বাড়ানো হবে কিনা সে সম্পর্কে এখনই কিছু বলতে পারছেন না এই কর্মকর্তা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত