সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

২৮ জুন, ২০২০ ১২:১৭

সুনামগঞ্জে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪৫ হাজার পরিবার

ভারতের পাহাড়ি ঢলে ও টানা বৃষ্টিপাতের সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার প্রায় ৪৫ হাজার পরিবার।

রোববার (২৮ জুন) সকাল ১০টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বিভিন্ন উপজেলার সাথে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে ভারতে মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলে এবং সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে হাওর এলাকাগুলো পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ শহরের কাজির পয়েন্ট, নবীনগর, আরপিন নগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দিয়েছে প্রশাসন। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখা হয়েছে সুরক্ষা সামগ্রী। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ১১টি উপজেলায় ৪১০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও ২৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে প্রশাসন।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ২১৩ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পানি অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শহরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা দিলাল আহমেদ বলেন, আমাদের এলাকাটি সুরমা নদীর নিকটবর্তী হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি এসে আমাদের ঘরবাড়িতে এসে পানি প্রবেশ করে। রাস্তাঘাটে হাটু পানি হয়ে যায়, বর্তমানে আমরা খুব কষ্টে জীবন-যাপন করতেছি।

শহরের ময়নার পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম কালা বলেন, বানের পানিতে আমার পুকুরের সব মাছ তলিয়ে গেছে। প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এখন যদি সরকার আমাদের সহায়তা করে তাহলে কিছুটাও হলেও আমাদের উপকার হবে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে সে কারণে পাহাড়ি ঢলে আমাদের হাওর এলাকায় দ্রুত গতিতে পানি প্রবেশ করতেছে। আজকে ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ২১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৪১০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে খাবার সরবরাহ করার জন্য বলা হয়েছে এবং আমরা ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছি। এছাড়া যেকোনো সমস্যা সমাধান ও সহযোগিতার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত