গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি

০২ জুলাই, ২০২০ ১৩:৪৫

গোয়াইনঘাটে ভার্চুয়াল পাঠদান গতিশীল করার তাগিদ

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এমতাবস্থায় সারা দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে গতিশীল রাখতে সরকারের তরফ থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সংসদ টিভিতে প্রতিদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়। সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও এই শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লিপিবদ্ধ। কিন্তু শুরু থেকে সরকারের এই নির্দেশিত শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়সমূহ বন্ধ থাকা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমন্বয় না থাকা সর্বোপরি শিক্ষা অফিস থেকে নির্দেশনা থাকলেও শিক্ষা কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ২০-৩০ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে। স্মার্টফোন স্বল্পতাও রয়েছে শত শত পরিবারের মধ্যে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আছে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনাও। যে কারণে শিক্ষা অফিস, শিক্ষক ও দায়িত্বশীলদের আন্তরিকতাসহ উদ্যোগ থাকলেও তার প্রতিফলন ঘটছে না। এদিকে এমতাবস্থায় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ভার্চুয়াল পদ্ধতির শিক্ষা কার্যক্রমকে গতিশীল করতে উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও আন্তরিক।
সিলেটের গোয়াইনঘাটে লকডাউন আরম্ভ হওয়ার পরপরই গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক গোয়াইনঘাটের সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে নির্দেশনা প্রদানসহ নিজস্ব চিন্তাচেতনা ও উদ্যোগ থেকে শিক্ষা সহায়ক বেশকিছু ফর্মুলা তৈরি করে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের মধ্যে সরবরাহ করে শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যসূচি চালিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন।

গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক মো. আব্দুল মালিক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় সারাদেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়ায় সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়ে যায়। তবে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুবিধার্থে সরকার সংসদ টিভিসহ অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন সেবা চালু করলেও গোয়াইনঘাটে তার বাস্তবায়নে তেমন সফলতা চোখে পড়ছে না। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে উপজেলার শিক্ষা কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে তিনি শিক্ষক সমাজের প্রতি আহবান জানান।

এ ব্যাপারে কথা হলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম জানান, সরকারের নির্দেশিত শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি নির্দেশ মেনে চলতে সকল শিক্ষক এবং শিক্ষা পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে। সংসদ টিভিতে চলমান পাঠ্যসূচি চালিয়ে নিতে গোয়াইনঘাটের সকল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া জানান, সরকার নির্দেশিত যেকোন ইতিবাচক উদ্যোগ ও নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জেলা শিক্ষা অফিসের পাঠানো সকল দিক নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করছি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে জেলা শিক্ষা অফিসার ইতিপূর্বে আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব জানান, করোনায় সৃষ্ট দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে গোয়াইনঘাটের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে সরকারের নির্দেশিত সকল দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসন আন্তরিকতার সহিত কাজ করে যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি জনকে ২০ প্যাকেট করে বিস্কুট, প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত উপবৃত্তির টাকা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের সম্ভব হলে মোবাইলে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ইতিপূর্বে গোয়াইনঘাটের স্কুল বন্ধ চলমান শিক্ষা কার্যক্রম তদারকি করতে ডৌবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনে যাই। শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেই এবং তাদেরকে মাস্ক উপহার দেই। গোয়াইনঘাটের সবকটি বিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকরা আরও আন্তরিক হলে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা ব্যাপকহারে উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত