বড়লেখা প্রতিনিধি

০৪ জুলাই, ২০২০ ২৩:৩২

বড়লেখায় সংঘর্ষ : প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযানে পুলিশ

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পলিথিন আটকের জের ধরে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দায়ের করা দুটি মামলার আসামিদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। মামলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান আসামি সাইদুলসহ অন্যরা এখনও পলাতক রয়েছেন।

গত শুক্রবার (৩ জুলাই) দিবাগত রাতে মামলার প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। আজ শনিবারও (৪ জুলাই) সাইদুল ইসলামসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানের বিষয়টি থানার ওসি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মামলার প্রধান আসামি সাইদুলকে গ্রেপ্তার করতে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি বিশেষ টিম সিলেট নগরীর গার্ডেন টাওয়ারের ২০৬৪ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অংশ নেয় সিলেট কোতোয়ালী থানার সোবহানীঘাটস্থ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নাইম ও এটিএসআই জহিরসহ পুলিশের আরো একটি টিম। এসময় তাকে বাসায় পাওয়া যায়নি। বিল্ডিং এর সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে তার অবস্থান জানার চেষ্টা করা হয়।  

এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক শনিবার (৪ জুলাই) রাতে বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলার পর ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে শনিবার আদালাতে পাঠানো হয়। মামলার পর থেকে প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। শুক্রবার রাতে মামলার প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সিলেটে তার বাসায় অভিযান চালাই। সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। সাইদুলসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে শনিবার বিকাল থেকে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালানো হয়। গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে।’

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (১ জুলাই) স্থানীয় প্রশাসন পৌর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মজুদ করা প্রায় ৭০ মণ নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধার করে। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামের পারিবারিক মালিকানধীন রেলওয়ে স্টেশন রোডস্থ শাহজালাল শপিং সিটি থেকেও পলিথিন উদ্ধার করে প্রশাসন। এ ঘটনার পর থেকে আসামিরা শামীম আহমদকে (মামলার বাদী) সন্দেহ করছিলেন। তাদের ধারণা শামীম আহমদ পুলিশকে তথ্য দিয়ে পলিথিনগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন। এ আক্রোশে বৃহস্পতিবার সকালে শহরের উত্তর বাজার এলাকায় শামীম আহমদকে কুপিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে যায়। এতে শামীম গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে থাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শামীম আহমদের উপর হামলার খবর পেয়ে তার ভাই জসিম উদ্দিনসহ স্বজনরা ঘটনাস্থলে গেলে বেলা ১টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে জসিম উদ্দিনসহ প্রায় ১২জন আহত হন। জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আহত অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্র জানিয়েছেন, দুপুরে সংঘর্ষের সময় পর পর তিন রাউন্ড গুলির শব্দ শোনেছেন তারা। তবে এই গুলির সত্যতা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এছাড়া সংঘর্ষের খবরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ। থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হককে সাথে নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত শামীম আহমদ বাদী হয়ে ১৮ জনের ও জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। দুটি মামলায় সাইদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত