সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১০ জুলাই, ২০২০ ২০:১৫

তাহিরপুরে টানা বৃষ্টি ও ঢলে আবারও বন্যা

বন্যার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই আবারও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় গত দু দিনের টানা বৃষ্টি ও ঢলে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে।

ফলে প্লাবিত হচ্ছে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা। আর হাওরাঞ্চল জুড়ে বন্যা আতংক বিরাজ করছে। এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।

শুক্রবার দুপুরে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তীর উপচে শহরের কয়েকটি এলাকায় প্রবেশ করেছে।

জানা যায়, গত সাপ্তাহে উপজেলার বাদাঘাট, দক্ষিণ শ্রীপুর, উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ বড়দল, তাহিরপুর সদর ইউনিয়নসহ ৭টি উপজেলায় বন্যার এর রেশ কাটতে না কাটতেই  আবারও গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদী ও হাওরের পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এসব এলাকার কয়েক শতাধিক গ্রামের মানুষ নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর,তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।    

আরও জানা যায়, গত সাপ্তাহের বন্যায় খামারি, সড়ক অবকাঠামো,আউশ ধান ও বীজতলা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়। এছাড়া হাওর এলাকার অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত দুদিন থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। একইভাবে বৃষ্টি হচ্ছে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে। সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা ১৮৩ মিলিমিটার।

এছাড়াও বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি সমতলের ৭.৪৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে এবং বিপদ সীমার ৩৪সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ঘন্টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৩৫মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।

অন্যদিকে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে যাদুকাটার নদীর পানি ৭.৭৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যাদুকাটা নদীর পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।

টাংগুয়ার হাওর পাড়ের আল আমিন, শফিকুর রহমান, আলী নবাব মিয়াসহ অনেকেই জানান, আমরা হাওরাঞ্চলে বাসিন্দারা প্রকৃতির কাছে অসহায়। আমাদেরকে প্রতি বছরেই বর্ষায় হাওরের বড় বড় ডেউয়ের আগাত থেকে ঘর বাড়ি ও জীবন রক্ষায় প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। হাওর পাড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জায়গা নেই। গত সাপ্তাহে বন্যা হয়েছে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। সরকারি সহায়তাও পাই নি। এখন কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেব এই নিয়ে দুশ্চিন্তার আছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান,সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে নদ-নদীর পানি, হাওরে পানি আবারও বিপদ সীমা অতিক্রম করে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত অব্যাহত আছে। আগামী ৩/৪ দিন জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে তাই সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত