মাধবপুর প্রতিনিধি

১৬ জুলাই, ২০২০ ১৪:০৩

মাধবপুরে মসজিদ স্থানান্তর নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

হবিগঞ্জের মাধবপুরে বহরা ইউনিয়নের রসুল পুর জামে মসজিদ স্থানান্তর নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৫ সালে নিরদা সুন্দরীর তার পৈত্রিক সম্পত্তি ২৭০ এবং ২৬৬ নং দাগের এর ৫১ শতক ভূমি থেকে ৪২ শতক ভূমি রসুলপুর গ্রামের সৈয়দ জহিরুল ইসলামের নামে বিক্রয়মূলে দলিল করে হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরিত একই দলিলে নিরদা সুন্দরী উল্লেখ করেন তার আরও ৯ শতক ভূমি রয়ে গেছে। পরবর্তীতে সৈয়দ জহিরুল ইসলামের মৃত্যুর পর তার সন্তান সৈয়দ মুজিবুল ইসলাম ১৯৮৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ১০৫৯নং দলিলের মাধ্যমে ২৭৩ এবং ২৭৪ দাগ নং থেকে ৫ শতক ভূমি রসুলপুর জামে মসজিদের নামে দান করেন, যা পরে ভূমি জরিপে দানকৃত ভূমি সৈয়দ মুজিবুল ইসলাম তার নিজের নামে পর্চা করে ফেরত নিয়ে গিয়েছে বলে জানান রসুলপুর গ্রামবাসী।

বিজ্ঞাপন

তখনই দেখা দেয় মসজিদের ভূমি নিয়ে মূল বিরোধ। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে সৈয়দ মুজিবুল ইসলাম কর্তৃক মসজিদের নামে দান করা ভূমির মূল মালিক রসুলপুর গ্রামের নগরবাসী সূত্রধরের স্ত্রী নিরদা সুন্দরী। তখন রসুলপুর জামে মসজিদের মুসল্লিরা জানতে পারে বর্তমানে যেখানে রসুলপুর জামে মসজিদটির অবস্থান রয়েছে সেই ভূমির দাগ নং ২৬৬, যার মূল মালিক রসুলপুর গ্রামের নিরদা সুন্দরী নামের একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী।

রসুলপুর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ আলী শাহীন জানান, মসজিদের ভূমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে আমরা গ্রামবাসী সৈয়দ মুজিবুল ইসলামের সাথে একাধিকবার সালিশ বৈঠক করি। বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় আমরা গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি মসজিদের জন্য সৈয়দ মুজিবুল ইসলাম পুনরায় তার নিজস্ব সম্পত্তি দান করতে হবে। অন্যথায় আমরা কেউ সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীর দখলি জায়গায় নির্মিত এই মসজিদে নামাজ পড়বো না। গত এক মাস যাবত আমরা কেউ এই মসজিদে নামাজ পড়ি না। গত ২৫ শে জুন গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি আমরা মসজিদটি স্থানান্তর করবো পার্শ্ববর্তী ভূমিতে। সেই মর্মে আমরা লিখিত রেজুলেশন করি। পার্শ্ববর্তী ভূমি আমরা গত ১৪ জুলাই ২৬৫৫ নং লি লের মাধ্যমে আমার পিতা হায়দর আলী ১৪ শতক ভূমি রসুলপুর জামে মসজিদের নামে ওয়াকফ (দান) করেন। গত ১০ জুলাই শুক্রবার মসজিদ স্থানান্তর করে প্রতিষ্ঠিত করেছি।

এ ব্যাপারে মসজিদের ভূমি দাতা রসুলপুর গ্রামের মজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবপুর বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রায় ৪০ বছর পূর্বে এলাকার জনসাধারণ নামাজ পড়ার স্বার্থে ৫ শতক জমির উপর এলাকাবাসীর সম্মিলিতভাবে রসুলপুর জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। গত শুক্রবার বাদ জুমা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেশ কিছু টিনশেড মসজিদের দেয়াল ভেঙ্গে টিনের চালা সহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, প্রয়াত নিরদা সুন্দরীর ওয়ারিশ হিসাবে তার সমস্ত সম্পত্তির ওপর নারায়ণ সূত্রধর প্রকাশ আ. সহিদ ২০১৯ সালে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বর্তমানে যা বিচারাধীন।

এ ব্যাপারে বহরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত জটিল এবং ধর্মীয় বিষয় হওয়ায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে একটি সুন্দর সমাধান করা চেষ্টা করছি।

মনতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আ. কাইয়ূম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উভয়পক্ষকে কোন রকম শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যে বলা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত