হৃদয় দাশ শুভ, শ্রীমঙ্গল

১৭ জুলাই, ২০২০ ০০:৫৪

এবার গরুর দাম পাওয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় খামারিরা

ঈদুল আযহা আসন্ন। মুসলিম ধর্মাম্বলম্বীদের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মত এবারও আশায় বুক বেঁধেছিলেন গরু খামারিরা৷ কিন্তু এবার সে আশায় বাধ সেধেছে করোনাভাইরাস। করোনার কারণে এবার পশুর হাটও বসবে সীমিত আকারে। আবার হাটে ক্রেতা আসবে কী না এ নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। ফলে গরুর দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা।

প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজারে প্রতিবছর ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ষাঁড় মোটাতাজা করেন গো-খামারীরা। বিগত বছরগুলিতে লাভের মুখ দেখলেও করোনার বছর এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় খামারিরা। তাছাড়া এবছর ষাঁড় মোটাতাজা করতে ব্যয়ও বেড়েছে বলে জানান তারা। এদিকে প্রাণী সম্পদ বিভাগ বলছে, এবছর স্থানীয় পশু দিয়ে জেলায় কোরবানী পশুর চাহিদা মিটানো সম্ভব।

তবে সংশ্লিস্টরা বলছেন, স্থানীয় পশু দিয়ে কোরবানীর চাহিদা মেটানো সম্ভব হলেও করোনা পরিস্থিতর জন্য ক্রেতাকে পশুর হাটে আনাই হবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের কাজ৷

প্রতিবছর ঈদুল আযহায় পুরো জেলাজুড়ে প্রায় ৮০হাজার পশু কোরবানি হয়। ঈদের ৩/৪ মাস আগে থেকেই প্রাকৃতিক উপায় সবুজ ঘাস, খড়, ভুসি ও  ভিটামিন খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেন মৌসুমি খামারিরা।

বিজ্ঞাপন



মৌলভীবাজারের কোরবানির হাটে ক্রেতাদের বড় একটি অংশ থাকেন প্রবাসী। এবছর করোনা মহামারিতে প্রবাসী নেই দেশে তারও প্রভাব পড়বে গবাদিপশুর হাটে। করোনা প্রভাবে গবাদি পশুর খাদ্য ও ওষুধের মূল্য বেড়েছে কয়েকগুণ, পাশাপাশি করোনার কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম ও বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছেন পশুপালনকারীরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাসুদার রহমান সরকার বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদকে ঘিরে মৌলভীবাজারে প্রায় ৭০ হাজার করোবানির উপযোগী গরু-ছাগল মজুত আছে। এই ৭০ হাজার পশুর মাঝে রয়েছেন গরু মোটাতাজাকরণ খামার, ছাগলের খামারসহ অসংখ্য প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারি। প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারি মানে যারা মাত্র ২/১টা গরু শখ করে লালনপালন করেন এবং কোরবানির ঈদসহ সুবিধাজনক সময়ে ভালো দামে বিক্রি করেন।

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলায় ১,৬৭০জন মৌসুমী খামারী প্রায় ২০ হাজার গরু মোটাতাজা করছেন। এর বাইরে ব্যক্তি উদ্যোগে আরও প্রায় ৫০ হাজার গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।

মৌসুমী গরু ব্যবসায়ী কামাল মিয়া বলেন, এবার গরু মোটাতাজাকরণ ও প্রতিপালনে যে টাকা খরচ হয়েছে সেই টাকা উঠে আসা নিয়েই শঙ্কায় আছি। লাভের চিন্তা না করে এবার আসল টাকা পেলেই হয়৷

তবে আরেক গরু ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, এবার করোনার জন্য ক্রেতা যেমন কম হবে তেমনি গরুও কম বাজার উঠবে। তাই যারা ভাবছেন গরুর দাম সস্তা হবে তারা আসলে ঠিক ভাবছেন না৷

এদিকে করোনা মহামারীকালীন সময়ে পশুর হাট নিয়েও আছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব৷ জেলাজুড়ে অনলাইনে গরু বিক্রির জন্য স্মার্ট হাট স্থাপন করা হলেও আশা নিরাশার দোলাচলে দুলছেন ব্যবসায়ীরা৷ অবশ্য জেলা প্রশাসন বলছে স্মার্ট হাটের মাধ্যমে পশু ক্রয় বিক্রয় অনেকটাই সহজে করা যাবে৷

আপনার মন্তব্য

আলোচিত