তাহিরপুর প্রতিনিধি

৩১ জুলাই, ২০২০ ২১:৫০

হাওরে বন্যায় বিলীন ঈদের আনন্দ

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে এখনও থৈ থৈ করছে বন্যার পানি। পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছে হাওরপাড়ের মানুষ। এ অবস্থায় এসেছে ঈদ। কিন্তু পানিবন্ধি এই মানুষদের মধ্যে নেই ঈদের আনন্দ।

তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের বাসিন্দা জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা বেগমের কথাই ফুটে হাওরপাড়ের এই নিরানন্দ ইদের চিত্র। তিনি বলেন, দু’বেলা দু’মুঠো পেটের ভাতই জোগাড় করতে পারি না। সেখানে ঈদের আনন্দ করার চিন্তা করব কি করে। বন্যার পানি আর হাওরের ঢেউয়ে বসতবাড়ি ভাঙ্গনের কারণে আমরা ঘর-বাড়ি রক্ষা করা নিয়ে ব্যস্ত। সামনের দিনগুলা কেমনে চলব সেই চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না। এইবার বন্যায় আমাদের সর্বস্বান্ত করেছে। কোরবানি দেওয়া তো দূরের কথা ঈদের দিন পরিবারকে একটু সেমাই খাওয়াতে পারব কিনা জানি না।

হাওরে বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়া মানুষের একটা অংশ আশ্রয়কেন্দ্রে ও অপর অংশ পানিবন্দি অবস্থায় বাড়িতে থেকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বানভাসী এসব মানুষের জন্য ঈদের আনন্দ উদযাপনের চেয়ে জীবন বাঁচানোই এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। ভিজিএফ, ভিজিডি ও বয়স্ক ভাতার অনুদানই তাদের সম্বল। তাও আবার কখনো পান,  কখনো পান না। এ অবস্থায় ঈদে তাদের মাঝে নেই আনন্দ।

বিজ্ঞাপন



বন্যায় তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলের মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি কিছুটা কমলেও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে তাদের।

তাহিরপুর  উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ইসলাম উদ্দিন জানান, এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। চলতি বছরে জমিতে ভালো ফসল হওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি। এর মধ্যেই গত এক মাসের  ব্যবধানে তিন বার বন্যার পানি বসত ঘরে উঠায় মানুষের ঘরে রাখা ধান-চালও নষ্ট হয়ে গেছে। চরম দূর্ভোগের শিকার হয়ে এক কথায় বন্যার পানিতে তাদের ঈদ আনন্দ শেষ।

তাহিরপুর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান করুনাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, আমার উপজেলায় পরপর তিন বার বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাওর পাড়ের মানুষজন খুবই কষ্ট করছে। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে ক্ষতিগ্রস্থরা উপকৃত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত