তাহিরপুর প্রতিনিধি

০২ আগস্ট, ২০২০ ১৩:১৬

ঈদে আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি তাহিরপুরের গরু ব্যবসায়ীদের

করোনা ও তিন দফা বন্যার কারণে হাওরপাড়ের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে। ফলে এবারের ঈদে আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের গরু ব্যবসায়ীদের।

কোরবানির ঈদে এবার লাভের বদলে ক্ষতির মুখে পড়েছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় পশুর হাটের ইজারাদার ও গরু ব্যবসায়ীরা। বাদ্য হয়ে অনেকেই স্বল্পমূল্যে গরু বিক্রি করেছেন আবার অনেকেই বিক্রি করতে পারেননি।

এ অঞ্চলের অনেকেই ঈদের আগে ধান বিক্রি করে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। এ বছর ধানের ভালো দাম না পাওয়া ও খাদ্য গোদামে সিন্ডিকেটের কারনে অনেক কৃষক ধান বিক্রি করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

তাহিরপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার। এই পশুর হাটে প্রতি বছরেই ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে পাইকার ও খামারীরা ভাল মানের বিভিন্ন সাইজের পশু নিয়ে আসেন। কিন্তু এবার তারা কাঙ্খিত মূল্য পান নি।
           
পশুর হাটে আসা আমবাড়ি গ্রামের কৃষক আলীনুর বলেন, এবার পশুর হাটে পানির দামে গরু বিক্রি হচ্ছিল। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ভেবেছিলাম গরুটা ন্যায্য মূূল্যেই বিক্রি করতে পারব কিন্তু তা আর হয় নি। আমার গরুটা কম হলেও ৮০-৯০ হাজার টাকা কিন্তু দাম উঠেছে মাত্র ৬০-৬৫ টাকা। তাই বিক্রি করে নি।

টাংগুয়ার হাওর পাড়ের কৃষক সবুজ মিয়া জানান, বন্যায় গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। কোরবানি ঈদে বেশি দামে বিক্রি করবো বলে সারা বছর যত্ন করেছি। দুটির দাম ৮৫ হাজার টাকা হলেও ৫৯ হাজার টাকায় শেষ পর্যন্ত দুটি গরু বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।

খামারী আবুল মিয়া জানান, ক্রেতারা গরুর দাম অনেক কম বলেছে এই কোরবানি ঈদে। তাই আসল দাম ওঠানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ছিল। আমি না পারতে ১৫টি গরুর মধ্যে ৫টি গরু বিক্রি করেছি, লাভ করতে পারিনি। বাকী গরু ফেরত নিয়ে এসেছি। কেবল বিক্রেতা নন, হাটের পশু কেনাবেচা নিয়ে হতাশ হাওরপাড়ের ইজারাদাররাও। প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় অনেক খামারি হতাশা নিয়ে হাট থেকে ফিরে গেছেন।

উপজেলার সচেতন মহল জানান, বাদাঘাট বাজারের পশুর হাটে প্রতি বছর কোরবানি হাটে বিপুল পরিমাণ পশু বিক্রি হয় কিন্তু এবার যা আশা করেছিলাম সে ভাবে বিক্রি হয় নি করোনা আর বন্যার কারনে। আর অনেক বিক্রেতা দাম না পেয়ে গরু নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বিক্রি নিয়ে ইজারাদা ও খামারীরা বেশ হতাশ। এবার বাজার ইজারা এনেছে তাদের লছ হবে।  

বাদাঘাট বাজারে ইজারাদার মাসুক মিয়া জানান, এবার উপজেলার বৃহত্তর পশুর হাটে গত বছরের যে পশু বিকিকিনি হয়েছে এবার তার তিন ভাগের এক ভাগ হয়েছে। এবার আমি ক্ষতি মুখে পড়েছি। আর এর আরেকটি কারণ হল উপজেলায় জনতা বাজার ও শান্তিপুর বাজারে অবৈধ ভাবে একটি সরকার বিরোধী চক্র বাজার পশুর হাট বসানোর কারনে আমি ক্ষতির শিকার হলাম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত