সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

০৩ আগস্ট, ২০২০ ১৭:৩২

জগন্নাথপুরের কোরবানির চামড়া সিলেটে : যা বললেন সেই চেয়ারম্যান

রোববার দুপুরে নগরীর আম্বরখানায় স্তূপ করে রাখা বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশুর চামড়া জব্দ করে সিলেট সিটি করপোরেশন। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে সেখানকার মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহবুবুল হক শেরীন এই চামড়াগুলো এনে আম্বরখানায় স্তূপ করে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছিলো সিটি করপোরেশন। আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে দুর্গন্ধের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে এগুলো জব্দ করা হয় বলেও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তবে পশুর চামড়া সিলেটের আম্বরখানায় ফেলে যাওয়ার বিষয়টিকে বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনটি দাবি করেন তিনি।

ফেসবুক সস্ট্যাটাসে মাহবুবুল হক লিখেন- সম্মানিত মিরপুর ইউনিয়ন বাসী, ভাইরাল হওয়া নিউজ টা নিয়ে আপনারা সবাই হয়তোবা বিভ্রান্তির ভিতর আছেন। তাই আমি সত্য ঘটনাটা তুলে ধরছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পড়ে যে, কোরবানির পশুর চামড়া কোনমতেই মাটিতে পোতা যাবে না বা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া যাবে না। সেই হিসেবে আমি মিরপুর ইউনিয়নের প্রত্যেকটি মসজিদ এবং মেম্বার সাহেবদের মাধ্যমে জনগণকে জানিয়ে দেই। ঈদের দিন সকল মাদ্রাসা থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হয় যে, তারা পশুর চামড়াগুলো বিক্রি করতে পারছেন না। আমি জগন্নাথপুরের ইউএনও মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করি, তিনি আমাকে একজন ডিলারের ফোন নাম্বার দেন। আমি ডিলারের সাথে যোগাযোগ করলে, আমাকে ডিলার জানায় যে তিনি আর কোন পশুর চামড়া খরিদ করছেন না। উপায়ান্তর না দেখে আমি ৩টা পিক-আপ ভ্যান ভাড়া করে প্রায় ৬৫০টি পশুর চামড়া সিলেট পাঠিয়ে দেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাত একটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোন ক্রেতা মিলেনি। তখন বাধ্য হয়ে আম্বরখানাস্থ আমাদের একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে অনেক খালি জায়গা আছে সেখানে পাঠিয়ে দেই, কেন না সাথে সাথে লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত না করলে চামড়াগুলো নষ্ট হয়ে যাবে সেসময় মাত্র পাঁচ বস্তা লবণ জোগাড় করা সম্ভব হয়, পরবর্তীতে রোববার দুপুর ১২টার দিকে ৩৫বস্তা লবণ আটশত টাকা করে খরিদ করি এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য ১৫০০ টাকা রোজে ১০ জন লোক নেই।

তিনি আরও লিখেন- লোকজন যাওয়ার আগেই সিলেটের মেয়র আরিফুল হক মহোদয় ওই জায়গায় পৌঁছে যান এবং আমাকে ফোন করেন, জানতে চান চামড়াগুলা এখানে রাখা কেন। আমি মেয়র মহোদয়কে বিস্তারিত বলার পরও উনি বললেন আমি চামড়াগুলো জব্দ করলাম এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমি মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ করলাম যে এই চামড়াগুলো থেকে যে টাকা আসবে এই টাকাগুলো মাদ্রাসার এতিম মিসকিন বাচ্চাদের জন্য খরচ হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি আমি সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় উনি ফোন কেটে দিয়ে লাইভ প্রোগ্রামে যে কথাগুলো বললেন তা খুবই দুঃখজনক। যেখানে ৬৫০টি চামড়া ছিল সেখানে তিনি বলেছেন চার থেকে সাড়ে চার হাজার চামড়া এবং জোরপূর্বক আমাদের জায়গার গেইট ভেঙ্গে বুলডোজার দিয়ে সবগুলি চামড়া নিয়ে যান। আপনারা যে খবরগুলো ভাইরাল দেখতেছেন একজন ফেসবুক লাইভ নেয়া ওই ব্যক্তি আমার মতামত অথবা বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন নি। আমি বিশ্বাস করি আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইনশাআল্লাহ জনবিরোধী, আইন বিরোধী, এমন কোন কাজ আমার জানা মতে করি নি এবং আপনারা মিরপুরবাসী লজ্জিত হবেন ইনশাআল্লাহ এমন কাজ আমি করবো না। আশা করি আমার এই লেখা থেকে বিষয়টি কিছুটা হলেও পরিষ্কার হবে। শীঘ্রই আমি সংবাদ সম্মেলন করে সম্পূর্ণ বিষয়গুলো দেশবাসীর কাছে জানিয়ে দেবো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত